ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ২০২২-এ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ১৯ আগস্ট ২০২২

আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ২০২২-এ বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ২০২২-এ বাংলাদেশ

বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনে এবং বিভিন্ন দেশের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্ব উৎসাহিত করতে অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে। এদের মধ্যে প্রথম শুরু হয় আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড, যার সূচনা হয়েছিল ১৯৫৯ সালে। তারপর পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন শাস্ত্র, জীববিদ্যা, ইনফরমেটিক্সসহ অন্যান্য বিষয়েও এই প্রতিযোগিতা চালু হয়েছে। এর ফলে স্কুল-কলেজের ছাত্ররাও ঈর্ষণীয় দক্ষতা ও সাফল্য দেখাচ্ছে।

জ্ঞানভিত্তিক এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ একটু বিলম্বে হলেও অংশগ্রহণ করছে। ২০০৪ সালে আমরা প্রথম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করি। ওই বছরই আমরা ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডের পর্যবেক্ষক হই, যাতে অর্থায়ন করেছিলেন নির্মাণ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী কামাল জিয়াউল ইসলাম সাহেব। এর আগেই অবশ্য অধ্যাপক জাফর ইকবালের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কম্পিউটার বিজ্ঞানের সিনিয়র অধ্যাপকদের নিয়ে বাংলাদেশ ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড কমিটি গঠিত হয়। বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ এবং দেশে বিভাগীয় ও জাতীয় অলিম্পিয়াড আয়োজনে পূবালী ব্যাংক, পিএইচপি ফ্যামিলি, গ্রীন বিশ্ববিদ্যালয়, মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে আইসিটি ডিভিশন, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস অর্থায়ন করেছে। পরিশেষে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বিনয়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবালকে ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করলেন। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে গণিত অলিম্পিয়াডেও ডাচ-বাংলা ব্যাংক উদারভাবে অর্থায়ন করে যাচ্ছে। একসময় ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডের ব্যবস্থাপনা আমি খুবই আনাড়িভাবে দীর্ঘদিন করে আসছি, যেখানে সিলেটের মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, কুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আমার দিকের কোনো সাহায্য ছাড়াই আয়োজন করেছে। 

২০২২ সালে প্রিলিমিনারি প্রতিযোগিতা একযোগে ৭টি বড় শহরে আয়োজিত হয় যার দায়িত্ব পালন করে সিলেটে মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহীতে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনায় খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুরে হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও চট্টগ্রামে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়।   জাতীয় প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বছরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি  এবং ২০২২ সালে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজকের দায়িত্ব পালন করে। বস্তুত ২০১৯ সাল থেকে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতা দুই দিনব্যাপী হয়ে আসছে যেখানে প্রতিযোগীরা প্রথম দিনের প্রতিযোগিতার পর আয়োজক ভেন্যুতেই রাত্রি যাপন করে এবং প্রতিযোগীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও স্থাপিত হয়। প্রতিযোগীদের প্রশিক্ষণের জন্য মূলতই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ও আইসিপিসির প্রতিযোগীগণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বাংলাদেশ দলের প্রাক্তন প্রতিযোগীগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে  অবদান রাখেন। বিশেষ করে এই বছরের প্রশিক্ষণের সময় আইসিপিসি ২০২০-এর Asia West Champion দল BUET HellBent-এর সদস্য আশিক, অর্ঘ্য এবং প্রীতম এবং এর আগের IOI-গুলোতে বাংলাদেশের হয়ে পদক পাওয়াকে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করা তাসমিম, রেজওয়ান, মামনুন প্রমুখ বিশেষ অবদান রেখেছে। 

২০০৯ সালে সিটি কলেজের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছাত্র বুলগেরিয়ার প্লভডিভ শহরে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় উপমহাদেশের ৮ জন প্রতিযোগীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয়ে দেশের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ের প্রতিযোগিতা থেকে প্রথম রৌপ্য পদক অর্জন করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই ছেলেটিকে আমরা দেশে ধরে রাখতে পারি নাই, এমনকি তাকে উৎসাহিতও করতে পারি নাই। ২০১২ সালে বৃষ্টি সিকদার ইতালির সিরমিয়ন মন্টিচেরিতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় সারা পৃথিবীর মেয়েদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হয় এবং ব্রোঞ্জ পদক পায়। পরবর্তীতে সে এমআইটি থেকে পাশ করে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ছাত্ররা এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে ৪টি সিলভার ও ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে। 

গত বেশ কয়েক বছর ধরে এই প্রতিযোগিতার দায়িত্ব হলো বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের লব্ধপ্রতিষ্ঠিত গবেষক অধ্যাপক সোহেল রহমানের কাঁধে। সে এখন প্রতিযোগিতার সকল পর্যায়ের কাজগুলো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে করেছে। বিগত দুই বছর করোনার চ্যালেঞ্জিং সময়ে অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে অলিম্পিয়াড সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড আয়োজন করেছে। প্রাকনির্বাচনী পর্যায়ের অলিম্পিয়াড, জাতীয় পর্যায়ের অলিম্পিয়াড, প্রতিযোগীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও থাকার ব্যবস্থা করা সবই যথাযথ অর্থায়নের মাধ্যমে আয়োজনের ব্যবস্থা করেছেন। এর আগে ২০১৯ সালে আজারবাইজান IOI 2019 অনুষ্ঠিত হবার পর করোনার জন্য পরপর দুটি প্রতিযোগিতা অর্থাৎ IOI 2020 এবং IOI 2021 অনলাইনে হয়েছে। তাতেও ছিল নানা ঝক্কি; সফটওয়ার প্রস্তুত, পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা, করোনার নিয়ম-কানুন মেনে চলা ইত্যাদি। এই দুই বছর অনলাইনে আয়োজনের জন্য বুয়েটের উপাচার্য মহোদয়ের পৃষ্ঠপোষকতার কথা স্মরণীয়। এবার আয়োজকেরা ইন্দোনেশিয়ার ইওগিয়াকার্তা শহরে সরাসরি, মিক্সড ও অনলাইন সব পদ্ধতিতেই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনার মধ্যে যাতায়াতের ঝক্কি, ভিসা প্রাপ্তিসহ নানা সমস্যা। বিদায় জানাতে যথারীতি মধ্যরাতে জাফর ভাই বিমান বন্দরে উপস্থিত। এর আগে এমনকি সিলেট থেকেও জাফর ভাই এবং ইয়াসমিন ভাবি শুধুই দলকে বিদায় জানাতে সিলেট-ঢাকা-সিলেট ভ্রমণ করেছেন। ৬ আগস্ট মধ্যরাত পার হয়ে ৭ আগস্ট সকালে এমএইচ ১৯৭ ফ্লাইটযোগে কুয়ালালামপুর যাত্রা। আহা এই যাত্রাটি যদি বাংলাদেশ বিমানে হতো! এসিএম আইসিপিসি এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে যুক্তরাষ্ট্রে কিন্তু আমরা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ বিমানে ভ্রমণ করেছিলাম। সেই ফ্লাইটে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ ছিলেন এবং আমাদের দলের সঙ্গে তিনি এসে কথা বলে আমাদের উৎসাহিত করেছিলেন। আজ এত কাছের দেশ ইন্দোনেশিয়াতে বাংলাদেশ বিমানে যেতে পারলাম না। আশা করি অচিরেই এ বিষয়ে আমাদের অগ্রগতি হবে, পৃথিবীর অষ্টম বৃহত্তম জনবহুল দেশের মানুষকে বিদেশি ফ্লাইটে ভিনদেশি এয়ার ক্রু’র বিদেশি উচ্চারণে বিদেশি ভাষায় কথা শুনে যেতে হবে না। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যগামী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য এটা হবে অনেক বড় স্বস্তি।

সারা জীবন কৃচ্ছসাধন করে চলার চেষ্টা করলাম। সোহেল এ বিষয়ে আরও সতর্ক। একবার গবেষণা এবং সেমিনার প্রদানের নামে অধ্যাপক সোহেল রহমান পরিচালিত এক গবেষণা প্রকল্পের আওতায় সে আমাকে রয়াল ল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছিল। ২০০৪ সালে প্রাগে যেতে লন্ডনে ট্রানজিট ভিসা প্রয়োজন ছিল কয়েক ঘণ্টার জন্য। তার জন্য আমার পাসপোর্টের পুরা এক পৃষ্ঠা দাবি করাতে যেতে রাজি হইনি। সোহেল ভিসাপ্রাপ্তির বিষয়গুলো অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করল। হিথ্রোতে পৌছেছি। সোহেল নানা হিসাব করছে কোন পথে গেলে কোন জোন পরিহার করলে অল্প খরচে তার বাসায় পৌছানো যাবে। আমি তো মহাখুশি। এবারও ইন্দোনেশিয়া যাত্রায় তাকে অনেক কিছু মাথায় রেখে একেবারে স্বল্প ভাড়ায় কীভাবে পৌঁছা যায় তার ব্যবস্থা করল। এরমধ্যে করোনাজনিত কারণে ফ্লাইট বদলাতে হলে তাতেও যেন বেশি পয়সা দিতে না হয়। আমি জানি না, বাংলাদেশের কত বিষয়ের জাতীয় দল রয়েছে তারা কি এসব বিষয়ে ভাবে? মনে রাখতে হবে, আমাদের অনেক অর্থনৈতিক উন্নয়নের পর আমরা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ। মধ্যম আয়ের দেশ কিংবা উচ্চ আয়ের দেশ হতে অনেক দূর যেতে হবে। এরপর যদি যোগ করি পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হলো বাংলাদেশ। আমার মনে হয় ইকোনমি ক্লাসের থেকে কোনো দামি ক্লাসেই আমাদের ভ্রমণ করা রীতিমত অনৈতিক, বিশেষ করে তা যদি বাংলাদেশের এয়ারলাইন্স না হয়। এই সংস্কৃতির সূচনায় সর্বস্তরের নেতৃস্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ মানুষ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। এখন যেমন আমরা বিদ্যুতসহ সকল ব্যয়ে কৃচ্ছসাধন করছি, বিদেশি বিমানযাত্রার ক্ষেত্রে এটা সবসময় প্রযোজ্য হওয়া উচিত।     

যাই হোক, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটেই জাকার্তা পৌঁছলাম বিকাল ৩টায়। আমাদের দলনেতা অধ্যাপক সোহেলের লাগেজ পাওয়া গেল না, আবার কর্তৃপক্ষ লিখিয়ে নিলো যে তার কোনো দাবি-দাওয়া নেই। হোটেল অর্চার্ডসে পৌঁছলাম বিকাল সাড়ে ৫টায়। সুন্দর হোটেল ভাড়াও কম। আমরা তিনটি কক্ষে ছয়জন রইলাম। তারা আবার বিমান বন্দর থেকে আনা-নেয়ার কাজও করল। ৮ তারিখ সকালের নাস্তা খেয়ে  ইয়োগিয়াকার্তার উদ্দেশে ৫টায় হোটেল ছাড়লাম।  ফ্লাইট সকাল ৭টায়। টার্মিনাল পরিবর্তন করতে হলো ফ্রি বাস রাইডে। ইয়োগিয়াকার্তা বিমান বন্দর থেকে এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ে হোটেল রিচ ইয়োগিয়াতে পৌঁছলাম যেখানে প্রতিযোগীরা থাকবে এবং যেখানে প্রতিযোগিতাও হবে। আমাদের জন্য ১৫ মিনিট দূরে পুরনো ভবনে হোটেল হায়াত রিজেন্সিতে থাকার ব্যবস্থা, পৌঁছলাম বেলা ১২টায়। সোহেলের কক্ষ ৩৫০ আর আমার ৪৪০। 

আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে প্রতিটি দেশের সর্বোচ্চ ৬ জন প্রতিযোগী কিন্তু আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে ৪ জন। আমাদের এবারের চার রত্ন কম্পিউটার জাদুকর হলো রাজশাহীর নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের ফারহান আহমদ, চাঁদপুর গভ. কলেজের মোহাম্মদ নাফিসুল হক সিফাত, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের দেবজ্যোতিদাস সৌম্য এবং রাজশাহী ইউনিভার্সিটি কলেজের জারিফ রহমান এবং ঢাকার থেকে কোনো প্রতিনিধি নেই!

প্রতিযোগিতা দুই দিন পাঁচ ঘণ্টা করে হয়। তিনটি করে সমস্যা দিয়ে মোট নম্বর ৩০০+৩০০=৬০০। ১০ তারিখ স্থানীয় সময় ১টায় প্রতিযোগিতা শুরু হলো। চীনের চারজনই অনলাইনে অংশগ্রহণ করে পূর্ণ নম্বর ৩০০ করে পেল। আমরা ভালো করতে পারলাম না ফারহান পেল ১২৯, সিফাত ৮৯,  সৌম্য ৮৭ ও জারিফ ১২। আমাদের আরো ভালো করা উচিত ছিল কিন্তু সেখানে চাপও ছিল। পরে জানলাম আমাদের দলনেতার লাগেজ হারাতে প্রতিযোগীরা অনেক দুঃখ পেয়েছে। আহা এই ছেলেরা কত ভালো! প্রতিদিন কোভিড পরীক্ষা হয়। প্রথম প্রতিযোগিতার পরদিনই সোহেলের কোভিড পজিটিভ। আরো দুঃখজনক আমাদের ছাত্ররা তা জেনেও ফেলেছে। প্রথম দিনের ফলাফল খারাপ, দলনেতার কোভিডের মধ্যেও দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ দল প্রশংসনীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়াল- ফারহান পেল ১৭৯.৯৬, সিফাত ১২৩.৪১, সৌম্য ১২৪.৫১ এবং জারিফ ৯৭.৭২। প্রতিযোগীদের সর্বমোট স্কোর দাঁড়াল যথাক্রমে ৩০৮.৯৬, ২১২.৪১, ২১১.৫১ ও ১০৯.৭২।  

এবার ফারহান পাচ্ছে সিল্ভার, সিফাত ও সৌম্য পাচ্ছে ব্রোঞ্জ আর প্রথম দিনের স্কোর ১২ থেকে যুদ্ধ  করে ১০৯.৭২ পাওয়া জারিফ শেষদিনের পারফরমেন্সের জন্য এই প্রথম বার পাবে সম্মানসূচক উদ্ধৃতি। সুতরাং সর্বসাকুল্যে বাংলাদেশ এই প্রতিযোগিতায় এই পর্যন্ত পাঁচটি সিল্ভার,  ২০টি ব্রোঞ্জ পদক ও একটি সম্মানসূচক উদ্ধৃতি পাচ্ছে।  

অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতাগুলো বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের জ্ঞান দক্ষতার সমীহ আদায় করছে। আমাদের মধ্য আয়ের কিংবা উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তরের স্বপ্নের চাবিকাঠি হলো একমাত্র জ্ঞান ও দক্ষতা, যা দিয়ে কোরিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুরের মতো দেশ আমাদের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে গেছে। জ্ঞানভিত্তিক কর্মকাণ্ডগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে, উৎসাহিত করতে হবে, প্রণোদনা দিয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০০ সালে বুয়েটের ৮ জন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে প্রোগ্রামিং নৈপুণ্যের জন্য প্রত্যেককে নগদ এক লক্ষ টাকা করে পুরস্কৃত করেছিলেন। তারপর ২০০০ সালে মুস্তাক, মুনিরুল  ও ফেরদৌসের দল যখন এমআইটি, হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড ও বার্কলের মতো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পিছনে ফেলে একাদশ স্থান দখল করেছিল তখনও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেককে এক লক্ষ টাকা করে পুরস্কৃত করেছিলেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর দেশ নানা প্রণোদনা দিয়ে আমাদের তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরীদের তথ্যপ্রযুক্তির দক্ষতাকে উৎসাহিত করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।