ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের জয় সব সময়ই অধরা। ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, ইনজামাম-উল হকরা চেষ্টা করেছিলেন পারেননি। মিসবাহ-উল হক, শহিদ আফ্রিদিরা চেষ্টা করেছিলেন পারেননি। সব মিরিয়ে দুই ফরম্যাটে মোট ১২বার দু’দল মুখোমুখি হয়েছিল। এর মধ্যে ৭ বার ওয়ানডে বিশ্বকাপে, ৫ বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
কোনোবারই পাকিস্তান পারেনি ভারতের কাছে। প্রতিবারই পরাজিত দলে থেকেছে তারা। আর জয়ী দলটির নাম সব সময়ই ভারত।
এবারও বিশ্বকাপে যখন দুই দলকে একই গ্রুপে রাখা হলো তখন থেকেই উত্তেজনা। দু’দলের ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে সাবেক এবং বর্তমান ক্রিকেটাররা পর্যন্ত বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পাকিস্তান দৃঢ়তার সঙ্গেই বলে আসছিল, এবার তাদের শক্তি আছে ভারতকে হারানোর। কিন্তু তেমন শক্তি সব সময়ই থাকে। তাতে কোনো লাভ হয় না, বিশ্বকাপের মঞ্চে কেন যেন ভারতের সামনে ম্রিয়মান হয়ে যায় পাকিস্তান।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সে সত্যেরই প্রমাণ মিললো। ভারতের করা ১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানকেও ভুগতে হতে পারে, এমন মন্তব্য অনেক বোদ্ধাই করে ফেলেছেন।
কিন্তু বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান একবারের জন্যও ম্যাচটাকে হেলে যেতে দেননি ভারতের দিকে। একবারের জন্যও আউট হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেননি তারা দু’জন। বরং, প্রথম থেকেই তারা ছিলেন খুব ক্লিনিক্যাল। প্রতিটি বল বিচার-বিশ্লেষণ করে শট খেলেছেন। ভালো বলগুলোকে ঠেকিয়েছেন। আলগা বল পেলেই সীমানাছাড়া করেছেন।
এভাবে ভুবনেশ্বর কুমার, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি, বরুন চক্রবর্তি কিংবা রবিন্দ্র জাদেজা- কাউকেই ছেড়ে কথা বলেননি, সমীহ দেখাননি। একই সমান্তরালে, ধীরস্থিরভাবে দলকে জয়ের লক্ষ্যে নিয়ে গেছেন বাবর এবং রিজওয়ান।
সর্বশেষ তাদের ব্যাটে এসে গেলো সেই ঐতিহাসিক জয়। যে জয়ের জন্য পাকিস্তানিরা দীর্ঘ বছরের পর বছর অপেক্ষার প্রহর গুনছিল। প্রতিটি বিশ্বকাপ আসে আর পাকিস্তানি সমর্থকরা আক্ষেপ করে বলে, আর কত? অবশেষে সেই আক্ষেপ ঘুচিয়ে দিলেন বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। হাতের মুঠোয় পেয়ে গেলেন সেই অধরা সোনার হরিণ।
৫২ বলে খেলা বাবর আজমের ব্যাটে ছিল ৬টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কার মার। আর ৫৫ বলে ৭৯ রান করা মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটে ছিল ৬টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কার মার।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলির ৫৭ রানের ওপর ভর করে ভারত সংগ্রহ করেছিল ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান।
গাজীপুর কথা