ঢাকা,  সোমবার  ০৬ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে স্বামী কারাগারে!

প্রকাশিত: ১১:৩০, ২৩ জুলাই ২০২৩

স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে স্বামী কারাগারে!

ফাইল ছবি

ফেনীর সোনাগাজীতে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় স্বামী মহিউদ্দিন রাজুকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শনিবার (২২ জুলাই) বিকেলে রাজুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে এ ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ই একে অপরের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন। 

এর আগে শুক্রবার রাতে স্ত্রী মোমেনা বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন বলেন, অভিযুক্ত মহিউদ্দিনকে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে আদালত ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজু ও মোমেনার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। মোমেনা আমেরিকার প্রবাসি ছিলেন। তিনি আমেরিকায় থাকাকালীন রাজু তাকে নানাভাবে বিরক্ত করতেন। গত ৭ জুলাই মোমেনা আমেরিকা থেকে দেশে ফেরেন। ৮ জুলাই ফেনীর ট্রাংক রোডে ডাক্তার দেখাতে গেলে রাজু পথ আগলে কথা আছে বলে তাকে একটি গলিতে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকজন লোক আগে থেকে বসা ছিল। একজন লোক নিজেকে অ্যাডভোকেট পরিচয় দিয়ে আগে থেকে তৈরি করা এফিডেভিটে স্বাক্ষর করতে বলে। স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করলে রাজু ছুরি বের করে হত্যার হুমকি দেয়। পরে ভয়ে চারটি কাগজে স্বাক্ষর করেন মোমেনা। সেই কাগজপত্রে বিয়ের ডকুমেন্টস তৈরি করা হয়।

এজাহারে মোমেনা আরও উল্লেখ করেন, গত ১৪ জুলাই আমি প্রয়োজনীয় কাজে সোনাগাজী গেলে রাস্তার ওপর রাজু একটি প্রাইভেটকার নিয়ে আমাদের সামনে দাঁড়ায়। তখন তার সঙ্গে আরও ২ জনের সহযোগিতায় আমি ও আমার মেয়েকে টেনে হিচড়ে গাড়িতে তুলে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। পরে সে ফেনী শহরের একাডেমি এলাকার একটি বাসায় আমাকে তিন দিন পর্যন্ত আটকে রেখে ধর্ষণ করে। ঘটনা জেনে আমার স্বামী দেশে ফিরলে তাকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার সোনাগাজী থানায় মামলা করি।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামী রাজু বলেন, মোমেনা আমেরিকা প্রবাসী স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে একটি কন্যাসন্তানকে নিয়ে আমার সঙ্গে দাম্পত্য জীবন শুরু করে। মোমেনা আক্তারের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পরও সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। সে বিভিন্ন সময়ে মোবাইলে তার স্বামী তাকে নির্যাতন করে বলে কান্নাকাটি করেছে। তার স্বামীকে তালাক দিয়ে আমাকে বিয়ে করে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে আমি তার সঙ্গে বিয়েতে রাজি হই। এসময়ে সে আমাকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়ার টাকা চাইলে আমি তাকে কয়েক দফায় ১৭ লাখ টাকা প্রদান করি। এছাড়া বাড়ি থেকে আমার প্রথম স্ত্রীর ৭-৮ ভরি স্বর্ণালংকার তাকে উপহার হিসাবে দিয়েছি।

আদালত চত্বরে রাজু আরও বলেন, গত বছর আগস্টে সে নোটারি পাবলিক ও চরহাজারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তার স্বামীকে তালাক দেয়। চলিত মাসের ৮ তারিখে আমরা নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিট করার পর কাবিনে স্বাক্ষর করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তার সাবেক স্বামী ও দুই ভাই তাকে জিম্মি করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করায়।

অভিযুক্ত মহিউদ্দিন রাজু এসময় তার বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে স্ত্রী কর্তৃক আগের স্বামীকে তালাকের কাগজপত্র, তার সঙ্গে বিয়ের কাবিননামা, নোটারি পাবলিকের এফিডেভিটের কপি, ফোনকল ও ইমোতে বিয়ে সংক্রান্ত কিছু কথা ও রেকর্ড হস্তান্তর করেন।