করোনাপরবর্তী সময়ে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরুর পর নতুন একটি অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন যাত্রীরা। এতদিন অনলাইনের পাশাপাশি কাউন্টারে টিকেট দেয়া হলেও করোনার এই সময়ে শতভাগ টিকেট অনলাইনে দেয়া হচ্ছে। সঠিকভাবে টিকেট কাটার নিয়ম না জানায় অনেকেই অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
মূলত দুইভাবে ট্রেনের অনলাইন টিকেট কাঁটা যায়। একটি সিএনএসবিডির ওয়েবসাইট থেকে, অপরটি ফোনে অ্যাপের মাধ্যমে। প্রথম পর্বে মোবাইল ফোনে অ্যাপ থেকে টিকেট কাটার বিস্তারিত পদ্ধতি তুলে ধরা হল।
ফোন থেকে অনলাইনে টিকেট কাটতে হলে প্রথমেই আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থেকে রেলসেবা অ্যাপটি নামাতে হবে।
রেলসেবা অ্যাপ
এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফোন নম্বর দিয়ে সাইন আপ তথা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
লগ ইন করার সময় ফোন নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিতে হবে
রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে আপনি রেলসেবা অ্যাপে লগ ইন করতে পারবেন। লগ ইন করলে প্রথমে অ্যাপের হোমপেজ দেখা যাবে। সেখানে ‘পারচেজ’ ও ইনফরমেশন দুটি ভাগ থেকেই ট্রেনের টিকেট কাটা যাবে।
শুরুতেই পারচেজ ও ইনফরমেশন অপশন রয়েছে, এখান থেকে টিকেট কাটা যাবে
পারচেজ অপশনে ক্লিক করলে আপনারা নিচের ছবির মতো পেজ পাবেন। সেখানে ফ্রম স্টেশন অপশনে যেখান থেকে যাত্রা করবেন ও টু স্টেশন অপশনে গন্তব্যস্থল স্টেশনের নাম লিখবেন। আপনি নাম লেখার সময়েই স্টেশনের নামের সাজেশন পাবেন যা কাজকে আরো সহজ করে তুলবে।
এখানে যাত্রা শুরুর স্টেশন, গন্তব্য স্টেশন ও যাত্রার তারিখ দিতে হবে
দুই স্টেশন সিলেক্ট হয়ে গেলে যাত্রার তারিখ সিলেক্ট করবেন। বর্তমানে পাঁচ দিন পরের পর্যন্ত অগ্রিম টিকেট দেয়া হচ্ছে, ফলে আপনি টিকেট কাটার দিন থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ দিন পরের টিকেট কাটতে পারবেন।
এখন পাঁচ দিন পরের পর্যন্ত অগ্রিম টিকেট কাটা যায়
এই তিনটি অংশ পূরণ হলে ‘সার্চ ট্রেন’ অপশনে ক্লিক করলে আপনার গন্তব্যের রুটে সেদিন কী কী ট্রেন চলবে সবগুলো দেখতে পারবেন।
ঢাকা-সান্তাহার রুটে নির্দিষ্ট তারিখে কোন ট্রেন কখন চলবে তার তালিকা
প্রতিটি ট্রেনের নামের নিচে গন্তব্যস্থল ও ছাড়ার সময় উল্লেখ করা থাকে। এর পর ক্লাস তথা কোন শ্রেণীতে ভ্রমণ করতে চান সেটি সিলেক্ট করতে হবে।
ক্লাস অপশনে ক্লিক করলে বিভিন্ন শ্রেণি দেখা যাবে
ট্রেনে বর্তমানে একটি আইডি থেকে একবারে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কাটা যায়। শ্রেণি নির্বাচনের নিচেই থাকছে সেই অপশন। সেখান থেকে আপনার কাঙ্ক্ষিত টিকেট সংখ্যা সিলেক্ট করে নিন।
এখন এক আইডি থেকে সর্বোচ্চ চারটি টিকেট কাটা যায়
এরপর এনি সিট অথবা সিলেক্ট সিট অপশনে ক্লিক করুন। এনি সিটে ক্লিক করলে রেলওয়ের সার্ভার অ্যালগরিদমের মাধ্যমে আপনাকে সিট নির্ধারণ করে দেবে। অন্যদিকে সিলেক্ট সিটে আপনি কোন সিটে বসতে চান তা নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন।
পেমেন্ট অপশন
সবকিছু হয়ে গেলে পে নাউ অপশনে গিয়ে ক্লিক করলে টিকেটের মূল্য পরিশোধের ছয়টি ভাগ সামনে আসবে। এগুলো হচ্ছে ভিসা, মাস্টারকার্ড, অ্যামেক্স কার্ড, বিকাশ, রকেট ও নেক্সাস কার্ড। যেকোনো একটি অপশনে গিয়ে অর্থ পরিশোধ করলেই আপনার টিকেট ক্রয় সম্পন্ন হবে।
আপনার সিট ও বগি নাম্বারসহ বিস্তারিত তথ্যের ই-টিকেট কিছুক্ষণের মাঝেই হিস্টোরি অপশনের আপকামিং জার্নি ও আপনার প্রদত্ত জিমেইলে পাঠানো হয়।
জার্নি হিস্টোরি বিভাগের বিভিন্ন অংশ
পারচেজ ছাড়া ইনফরমেশন অপশনে ক্লিক করেও টিকেট কাটা যাবে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে সেই রুটের নির্ধারিত দিনের ট্রেনগুলোর শর্টলিস্ট দেখে রুট, টিকেটের মূল্য, নির্দিষ্ট দিনে সেই ট্রেনে কয়টি সিট ফাঁকা আছে দেখা যায়। এই অপশনের সবশেষে পারচেজ টিকেট অপশনও রয়েছে।
ইনফরমেশন অপশনের বিভিন্ন আইকন
স্টেশন থেকে এই কপি দেখিয়ে টিকেটের হার্ড কপি প্রিন্ট করে নিয়ে সহজেই আপনি যাত্রা করতে পারবেন। তবে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র রাখতে ভুলবেন না।
গাজীপুর কথা