ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

দগ্ধ পায়েই মা-বোনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন রনি

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

দগ্ধ পায়েই মা-বোনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন রনি

সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনে দগ্ধ হয়েছেন বরগুনার বেতাগীর করুনা গ্রামের ১৭ বছর বয়সী জিশান শিকদার রনি। ঘটনার পর তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে এখনো পুরোপুরি সুস্থ না হলেও লঞ্চে থাকা মা-বোনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

সোমবার বিকেল থেকে অজ্ঞাতদের শনাক্ত করতে বরগুনা সদর হাসপাতালে স্বজনদের ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ শুরু করে সিআইডি বিভাগের চার সদস্যের একটি টিম। নমুনা দিতে বরিশাল হাসপাতাল থেকে রনি ছুটে আসেন বরগুনায়।

রনির স্বজনরা জানান, লঞ্চে আগুনের ঘটনায় নিখোঁজ হওয়া রনির ৩৫ বছর বয়সী মা রুনা বেগম ও ১২ বছরের ছোট বোন রুশনি আক্তার লিমার লাশ খুঁজে পেতে দগ্ধ পা নিয়েই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থেকে ছুটে এসেছেন রনি।

আরো পড়ুন: সুগন্ধায় একে একে ভাসছে লাশ, খুঁজছেন স্বজনরা

জিশান শিকদার রনি বলেন, নানু অসুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে মা ও ছোট বোনকে নিয়ে বৃহস্পতিবার বরগুনাগামী এমভি অভিমান-১০ লঞ্চে বেতাগীর উদ্দেশ্যে রওনা দেই। লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় ছিলাম আমরা। রাতের খাবার খেয়ে আমরা তিনজনই ঘুমিয়ে ছিলাম। গভীর রাতে হঠাৎ যাত্রীদের চিৎকার শুনে লাফিয়ে উঠে দেখি লঞ্চে আগুন জ্বলছে। তাড়াহুড়া করে মাকে নিয়ে আমি ছাদে চলে যাই। বোন ঘুমে থাকায় তাকে নিতে পারিনি।

তিনি আরো বলেন, চারদিকে আগুন দেখে কোনো উপায় না পেয়ে আমার সঙ্গে মাকেও নদীতে ঝাঁপ দিতে বলে আমি ঝাঁপিয়ে পড়ি। প্রায় এক ঘণ্টার মতো সাঁতরে নদীর কূলে উঠে পেছনে তাকিয়ে আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফিরে পেলাম তখন দেখি আমার পাশে মা ও বোন নেই। এখনো আমার মা ও ছোট বোনের কোনো সন্ধান পাইনি। যদি লাশও পেতাম নিজেকে একটু সান্ত্বনা দিতে পারতাম।

২৩ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগে। লঞ্চটি ভাসতে ভাসতে পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকার সুগন্ধা নদীর তীরে আটকে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

গাজীপুর কথা