ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ০৯ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

স্বামীর পৌনে দুই কোটি টাকা ফেরত পেলেন স্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:২৪, ১৪ আগস্ট ২০২৩

স্বামীর পৌনে দুই কোটি টাকা ফেরত পেলেন স্ত্রী

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখা।

১০ বছর আগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখায় এক কোটি টাকা সঞ্চয় রেখেছিলেন লুৎফর রহমান নামের এক গ্রাহক। টাকা রাখার তিন বছর পর গ্রাহক লুৎফর রহমান মারা যান। ওই হিসাব নম্বরে চলতি বছরের গত জুন পর্যন্ত লাভসহ এক কোটি ৭৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা জমা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে এই টাকা উত্তোলনের জন্য বারবার ব্যাংকে যাওয়া হলেও আজ পর্যন্ত উত্তোলন করতে পারেননি সেই টাকা।

আজ সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে টাকা উত্তোলনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন মৃত লুৎফরের স্ত্রী মোছা. সুলতানা। এরপরই টাকা ফেরত দেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোছা. সুলতানার ছেলে ফাহাদ রহমান। মোছা. সুলতানা শহরের সাবালিয়া এলাকার বাসিন্দা।

লুৎফরের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখার ম্যানেজার এই টাকা নিয়ে নানা তালবাহানা করেছেন। ম্যানেজারকে ব্যাংকের আইন সম্পর্কে অবগত করলেও টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে তিনি নানা অজুহাত দেখাতেন।

সংবাদ সম্মেলনে মোছা. সুলতানা লেনন, ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট তার স্বামী লুৎফর রহমান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখায় এক কোটি টাকার সঞ্চয় রাখেন। সঞ্চয়ে মোছা. সুলতানাকে নমিনী করেন লুৎফর রহমান। ২০১৬ সালের ১১ জুন লুৎফর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। লুৎফর রহমানের মৃত্যুর পর নমিনী হিসেবে স্ত্রী সুলতানা টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে যান। ব্যাংক থেকে সুলতানাকে জানানো হয় টাকার জন্য লুৎফর রহমানের বাবা মোসলেম উদ্দিন সাকসেশন সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সুলতানাকে টাকা দেওয়া যাবে না বলে ব্যাংক থেকে জানানো হয়। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৩ ধারানুসারে নমিনী হিসাবের সমস্ত টাকা উত্তোলনের একমাত্র অধিকারী মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ ক্ষেত্রে প্রার্থীপক্ষ আইনগত প্রতিকার প্রাপ্তি অধিকারী নন মর্মে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়। পরে ফাউন্ডিং দিয়ে গত ৩১ জুলাই মামলাটি খারিজ করা হয়। ৬ আগস্ট পুনরায় টাকা উত্তোলনের জন্যে ব্যাংককে গেলে শাখা ব্যবস্থাপক বিভিন্ন আইন দেখিয়ে সুলতানাকে টাকা দেননি।

সুলতানা বেগম আরো বলেন, ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তাদের নানাভাবে হয়রানি করছে। শাখা ব্যবস্থাপক টাকা না দিয়ে তিনি অনিয়ম করছেন। এতে তারা মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সব মিলিয়ে তারা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নমিনী হিসেবে লুৎফর রহমানের টাকা ফেরত দেওয়ার জোর দাবি জানান মোছা. সুলতানা।

মোছা. সুলতানার ছেলে ফাহাদ রহমান বলেন, সংবাদ সম্মেলনের পর ব্যাংক থেকে ডেকে নিয়ে টাকাগুলো আমাদের অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড টাঙ্গাইল শাখা প্রধান ভাইস প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ মাছউদ হাকিম খান জানান, এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন প্রকার মন্তব্য করা যাবে না। তবে বিকেলে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তিনি।