ঢাকা,  মঙ্গলবার  ০৭ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মধুখালীর ঘটনা নিয়ে যে ভয়ংকর গুজব রচনা করেছেন সোশ্যাল এক্টিভিস্টরা

প্রকাশিত: ১৬:০৬, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মধুখালীর ঘটনা নিয়ে যে ভয়ংকর গুজব রচনা করেছেন সোশ্যাল এক্টিভিস্টরা

সংগৃহীত ছবি

ফরিদপুরের ঘটনাকে ঘিরে পিনাকী ভট্টাচার্য ইউটিউব চ্যানেলে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। ‘ফরিদপুর থেকে বাংলাদেশের ধ্বংসের ইশারা’ এমন ক্যাপশনে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। তার দাবি, ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে মোদি সরকার, যেন ভারত বয়কট থেকে সবার দৃষ্টি সরে যায়। একই সঙ্গে নিজ দেশে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে ভোট কবজায় নেয়ার পাঁয়তারা করছে নয়াদিল্লি।’  তবে কথিত এসব বিশ্লেষক বা এক্টিভিস্টদের দাবিকে হাস্যকর বলছে সচেতন মহল।

গণপিটুনিতে দুই ভাইয়ের প্রাণহানির সপ্তাহ পার হলেও কাটেনি রেশ। মধুখালীর এ ইস্যু নিয়ে রীতিমতো চলছে ‘রাজনীতি’। সাম্প্রদায়িক রূপ দিতেও উঠেপড়ে লেগেছে সরকারবিরোধী মহল। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে ভয়ংকর গুজব রচনাও করেছেন কথিত সোশ্যাল এক্টিভিস্টরা। আর এসবে বিভ্রান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

বিদেশে বসে গুজব রটানোকারীদের মধ্যে অন্যতম পিনাকী ভট্টাচার্য। ফরিদপুরের ঘটনা ঘিরে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ছড়াচ্ছেন মিথ্যা তথ্য। ‘ফরিদপুর থেকে বাংলাদেশের ধ্বংসের ইশারা’ এমন ক্যাপশনে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। তার দাবি, ‘পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে মোদি সরকার, যেন ভারত বয়কট থেকে সবার দৃষ্টি সরে যায়। একই সঙ্গে নিজ দেশে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে ভোট কবজায় নেয়ার পাঁয়তারা করছে নয়াদিল্লি।’

কথিত এই এক্টিভিস্ট বলেন, ‘মধুখালীর এ ঘটনায় শেখ হাসিনা সরকারেরও সায় রয়েছে। এভাবেই ধীরে ধীরে ভারতের দখলে চলে যাবে বাংলাদেশ। মূলত এ হত্যাকাণ্ড দিয়ে দেশটির অধীনে যেতে শুরু করেছি আমরা।’ ঠিক পিনাকীর মতোই অনলাইন টকশো ‘ফেস দ্যা পিপলে’র মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ান কানাডায় বসবাসরত সাইফুর সাগর।

গুজবে উপকরণ বাড়াতে তার এ অনুষ্ঠানে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. কামরুল আহসানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বিতর্কিত দুই অতিথিই ফরিদপুরের ঘটনার পেছনে ভারতের ইন্ধন ও লোকসভা নির্বাচনের যোগসূত্র রয়েছে বলে জানান। দেশটিতে মুসলমানদের ভোটদানে বিরত রাখতেই এমন চেষ্টা বলেও দাবি করেন তারা। তবে কথিত এসব বিশ্লেষক বা এক্টিভিস্টদের দাবিকে হাস্যকর বলছে সচেতন মহল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ধর্মের ভিত্তিতে একটি দেশ ভাগ হওয়া বা দখলে নেয়া কল্পনাই বটে। সৈন্য পাঠিয়েও কোনো দেশ দখল করা সহজ নয়। কেননা ইউক্রেনের নতুন এলাকা রাশিয়া শুরুতে নিজেদের করে নিলেও আঞ্চলিক শাসন প্রতিষ্ঠার পর ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। কারণ এই দখলকে জাতিসংঘসহ কোনো স্টেকহোল্ডারই স্বীকৃত দেয় না।

রাষ্ট্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। নৃসংশ এই নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশসহ বহু মুসলিম রাষ্ট্র সংহতি জানালেও কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি। তেমনি সাম্প্রতিক এ ঘটনা ঘিরেও ভারতে প্রভাব পড়বে না। কারণ ধর্মীয় মতভেদ দেখিয়ে বড়জোর দাঙ্গা বাঁধানো যায়। কিন্তু একটি দেশের সংস্কৃতি বদলানো যায় না।

এছাড়া আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপির শাসনামলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেশি হয়েছে; যার বহু প্রমাণ রয়েছে। সেই সময় তো দেশ ভারত হয়ে যায়নি। আসলে অবাস্তব ও ঠুনকো যুক্তি দিয়ে ভারতবিদ্বেষ ছড়িয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই সোশ্যাল এক্টিভিস্টরা মধুখালীর ঘটনাটি জিইয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন, যার ইন্ধনদাতা সরকারবিরোধীরা বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।