ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কালীগঞ্জের এই স্বাধীনতা স্তম্ভটি যেন ইতিহাসের স্বাক্ষী

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ২৩ মার্চ ২০২১

কালীগঞ্জের এই স্বাধীনতা স্তম্ভটি যেন ইতিহাসের স্বাক্ষী

লাল আর ছাই বর্ণের শিল্পকর্মটি দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটি যেন একটি জলে ফোঁটা শাপলা। আবার হঠাৎ মনে হতে পারে এটি একটি পাল তোলা নৌকা। দূর থেকে দেখে গাজীপুরের কালীগঞ্জের এই স্বাধীনতা স্তম্ভটিকে এমনই মনে হয়।

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে শহীদ ময়েজ উদ্দিন সড়কের পাশের এই স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শিবলী সাদিক বাস্তবায়ন করেছেন এই স্মৃতির মিনারটি।

প্রায় এক বছর সময় নিয়ে তৈরি করা ‘স্বাধীনতা স্তম্ভ’ মিনারটি উদ্বোধন করছেন সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি। এসময় গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

স্তম্ভটির ঠিক মাঝখানে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের বিখ্যাত সেই লাইন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।

ভাষণের মূল স্তম্ভের বাম দিকে তৈরি করা ছাই বর্ণের তিনটি স্তম্ভ সাক্ষ্য দিচ্ছে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের। আর স্তম্ভের ডানদিকের তিনটি স্তম্ভ সাক্ষ্য দিচ্ছে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলনের।

৩২ ফুট দৈর্ঘ্য, ৩২ ফুট প্রস্থ ও ২০ ফুট উচ্চতার এই স্তম্ভটি লাল ও ধূসর বর্ণের গ্রানাইট পাথরে তৈরি। স্তম্ভটির ডিজাইন করেছেন পাভেল আহমেদ।

পাভেল আহমেদ বলেন, ‘ইউএনও শিবলী সাদিকের মূল ধারণার ওপর ভিত্তি করেই এটি তৈরি করা হয়েছে। গ্রানাইট পাথরের উপর এসএস দিয়ে লেখা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ মোট সাতটি আন্দোলনের কথা। সন্ধ্যা হলেই ঝলমলে হয়ে উঠবে পুরো স্তম্ভটি’।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শিবলী সাদিক বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্প্রসারিত করা ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনগুলো সম্পর্কে সকলকে জানাতেই মিনারটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ এই গাজীপুরেই প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন এখানকার বীর জনতা। ভাওয়ালের এই মাটিতে জন্মে ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ, ময়েজউদ্দিন, আহসান উল্লাহ মাস্টার, শহীদ হযরত, শহীদ নিয়ামত, শহীদ মনো খলিফাসহ প্রমুখ। কালীগঞ্জের মাটিতে একটি স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ করতে পেরে নিজেকে আজ দায়মুক্ত লাগছে’।

গাজীপুর কথা