মানুষ মহাকাশের অনেক রহস্যের সমাধান করলেও গভীর সমুদ্রের বেশিরভাগ অংশ এখনো অজানা রয়ে গেছে৷ একদল গবেষক এমনই এক আশ্চর্য জগত আবিষ্কার করছেন, যা সমুদ্রকে জানার দ্বার আরো উন্মোচন করবে। সেটা হলো ক্যারিবীয় সাগরের তলদেশে বিশ্বের বৃহত্তম আন্ডারওয়াটার রিসার্চ স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা। এটা অনেকটা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন (আইএসএস) এর মতোই হবে।
সমুদ্র বিজ্ঞানী ইয়েভেস বিহার এবং ফ্যাবিয়েন কাস্টিউ এরইমধ্যে আন্ডারওয়াটার রিসার্চ স্টেশনের ডিজাইন করেছেন। এতে প্রোটিয়াস নামে একটি ল্যাব থাকবে, যার দৈর্ঘ চার হাজার বর্গফুট। এই ল্যাবে ১২ জন গবেষক অবস্থান করতে পারবেন। তারা এখানে বসে সহজেই বিশ্বজুড়ে যোগাযোগ করতে পারবেন।
আগেই বলা হয়েছে এটির কাজ হবে অনেকটা আইএসএস এর মতো। মহাকাশে নভোচারীদের মতো এখানে একসঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকা সম্ভব হবে। এখানে অবস্থান করে বিজ্ঞানীরা সমুদ্র নিয়ে গবেষণা করবেন। বিশেষ করে সামুদ্রিক প্রত্নতত্ত্ব, উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে। এমনকি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শুরু করে সামুদ্রিক জীবনের অনেক রহস্যই উদঘাটন হবে।
ইয়েভেস বিহার এবং ফ্যাবিয়েন কাস্টিউ। ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞানীরা ইয়েভেস বিহার বলছেন, এই স্টেশনটির কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমুদ্র তলদেশের অজানা পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া। এছাড়া সাগরের স্রোতধারায় যে পরিবর্তন ঘটছে জলবায়ুর ওপর তার কী ধরনের প্রভাব পড়ছে সেটা সম্পর্কে জানা। এতে জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য দূর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়া যাবে।
কেমন হবে সেখানকার দিন-রাত? সেখানে ঘুমানোর মানে হলো হারমোনি মডিউলের স্লিপিং ব্যাগে ঢুকে চোখ বুজে পড়ে থাকা, আর সারা রাত ভেসে ভেসে কাটিয়ে দেয়া! তাই ‘ওঠা’, ‘নামা’ শব্দগুলো এখানে আপেক্ষিক। জাগার পর, বাকি কাজগুলো পৃথিবীর মতোই।
ডিজাইনার ফ্যাবিয়েন কাস্টিউস বলেন, ভবিষ্যতে আমাদের পথচলা এবং বেঁচে থাকার জন্য স্টেশনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমার মতে এটি মহাকাশ অনুসন্ধানের চেয়ে এক হাজার গুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বলা যায়, এটি আমাদের লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম।
জানা গেছে, প্রোটিয়াসের কাজ শেষ হতে আরো তিন বছর সময় লাগবে। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে প্রকল্পটি খানিকটা থমকে আছে!
গাজীপুর কথা