গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পূর্বচান্দরা ভাঙ্গা মসজিদ সরকারবাড়ী এলাকায় প্রেমিকাকে ফোনে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বাড়ির মালিক ইলিয়াস সরকারসহ ৪-৫ জনের একদল গ্রাম্য মাতব্বর ঘটনাটি মিমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে বাড়ীর মালিক ধর্ষণের শিকার কিশোরীসহ পরিবারের সদস্যদের ভাড়া বাড়ি ছেড়ে দিয়ে দেশে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ করেন ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা।
ধর্ষিতার পরিবার কোন উপায় না পেয়ে বিকেলের দিকে থানায় একটি অভিযোগ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামুন হোসেন (১৯) ও প্রেমিক সাগর হোসেনের বাবা মুন্না মিয়াকে আটক করে। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর বয়স আনুমানিক ১৪ বছর হবে। সে স্থানীয় একটি পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থী। তারা ওই এলাকার ইলিয়াস সরকারের বাড়ির একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন।
এলাকাবাসী, পুলিশ ও ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ছয় মাস ধরে একই এলাকায় বসবাস গার্মেন্টস কর্মী সাগরের সাথে পরিচয় হয় কিশোরীর। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে দুইজনের মধ্যে। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সাগর হোসেন ওই কিশোরীকে মোবাইল ফোনে ডেকে বাড়ির বাহিরে নিয়ে যায়। ওই কিশোরী বাড়ির বাহিরে গেলে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা সাগর হোসেন, মামুনসহ অজ্ঞাত আরও এক যুবক তাকে জোড়পূর্বক ধরে নিয়ে একই এলাকার আওলাদ হোসেনের একটি প্লটের বাগানের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রেমিকসহ সংঘবদ্ধদল সারারাত ধর্ষণ করে তাকে। বুধবার সকাল হলে স্থানীয় লোকজন ওই বাগান থেকে অজ্ঞান অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
কিশোরীর মা এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে চাইলে বাড়ির মালিক ইলিয়াস সরকারসহ আরও ৪-৫জন বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিশোরীর মা রাজি না হওয়ায় বাড়ীওয়ালা ও গ্রাম্য মাতব্বররা ভাড়া বাড়ি ছেড়ে দিতে নানা চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। পরে স্থানীয় এক যুবকের সহযোগিতায় কিশোরীর মা থানায় গিয়ে ওসি মোঃ মনোয়ার হোসেন চৌধুরির কাছে ঘটনাটি খুলে বলেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামুন ও প্রেমিক সাগর হোসেনের বাবা মুন্নাকে আটক করে।
কিশোরীর মা জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে মেয়েকে না পেয়ে খুঁজতে থাকি। সকালে মেয়েকে এলাকার কিছু লোক উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে বিষয়টি বাড়িওয়ালাসহ ৪-৫জন মাতব্বর মিমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। কিন্তু তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় বাড়ি থেকে বাড়িওয়ালা বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার হাতে পায়ে ধরে রক্ষা পাই।
কালিয়াকৈর থানার এসআই শহিদুল ইসলাম জানান, ওই কিশোরীর ধর্ষণের ঘটনায় প্রেমিকার বাবাসহ দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। কিশোরীর মা বাদী হয়ে একটি মামলা দিয়েছেন। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গাজীপুর কথা