ঢাকা,  মঙ্গলবার  ২১ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

পরিবেশ দূষণের অভিযোগে গাজীপুরে ফারদার ফ্যাশন লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত: ২১:০৯, ১০ মে ২০২৪

পরিবেশ দূষণের অভিযোগে গাজীপুরে ফারদার ফ্যাশন লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা

ফারদার ফ্যাশন লিমিটেড

গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মোগড়খাল এলাকার ফারদার ফ্যাশন লিমিটেডের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিববেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর জেলার সহকারী পরিচালক মো. মনিন ভূঁইয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে অবৈধভাবে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে ফারদার ফ্যাশন পরিবেশ দূষণ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। মামলায় বিবাদী করা হয়েছে ফারদার ফ্যাশনের মালিক মো. জাফর ইকবালকে।

জানা যায়, ফারদার ফ্যাশন লিমিটেড ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লানেরর মাধ্যমে ২০১৯ সালের পহেলা ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত অনুমোদন ছাড়াই বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আসছে। পাওয়ার প্ল্যানটিতে একটি ডিজেল চালিত জেনারেটরের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে নির্ধারিত মানমাত্রার বেশি শব্দ উৎপন্ন হয়। বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর পর থেকে কখনই কারখানাটি পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নেয় নি। কারখানার শব্দে আশেপাশে থাকা ২০/২৫ টি আবাসিক বাড়ির মানুষরা শব্দদূষণ জনিত নানা সমস্যা ভুগছেন।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে গত জানুয়ারিতে পরিবেশ অধিদপ্তরে একটি অভিযোগ দেন ওই এলাকার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন। তিনি তার অভিযোগ শব্দ দূষণের ফলে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণের বিষয়টি তুলে এর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সদর দপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক গত ২৯ জানুয়ারি ক্ষতিপূরণ বাবদ দুইলাখ টাকা জরিমানা এবং শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণপূর্বক পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ না করা পর্যন্ত কারখানার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নিদের্শ দেয়। কিন্তু এরপরেও থামেনি কারাখানাটির কার্যক্রম। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনার বিরুদ্ধে গিয়েও বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবেশ দূষণ করে আসছে কারাখানাটি।

এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর সদর নির্দেশ না মেনে কারখানা চালু থাকায় গত ৮ মে বুধবার বাসন থানায় মামলা দায়ের করেন পরিববেশ অধিদপ্তরের গাজীপুর জেলার সহকারী পরিচালক মো. মমিন ভূঁইয়া। মামলার ধারাগুলো হলেন- বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) সালের ৯ এবং ১২ ধারা এবং একই আইনের ১৫(১) ধারার ১০ ও ১২ নং টেবিলের লংঘন ও দন্ডনীয় অপরাধ এবং শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০০৬ এর বিধি ৭ এবং একই বিধিমালার বিধি ১৮ এর উপবিধি ১ ও ২।

মমিন ভূঁইয়া জানান, জরিমানা করার পরও প্রতিষ্ঠানটি অধিদপ্তরের নির্দেশনা মানছে না। আমরা একাধিকবার কারখানাটি পরিদর্শন করে ডিজেলের খালি ড্রাম, অয়েল ফিল্টার, লোহার যন্ত্রাংশ ইত্যাদি কারখানার ভিতরে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। কারখানার ভিতরে অত্যাধিক গরম, অস্বাস্থকর পরিবেশ। সেখানে কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেই। শ্রমিকরাও নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ছাড়া ভেতরে কাজ করতে দেখা যায়। তাদের অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থাও সন্তোষজনক নয় বলেও তিনি জানান।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাসন থানা পুলিশ। মামলাটি পরিবেশ অধিদপ্তর তদন্ত করবে বলেও জানিয়েছে থানা সূত্র।