ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

শ্রীপুরে সোনালী ব্যাংক হতে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

প্রকাশিত: ০৯:০৭, ১৮ জুলাই ২০২১

শ্রীপুরে সোনালী ব্যাংক হতে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

গাজীপুরের শ্রীপুরে সোনালী ব্যাংক হতে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারের ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ টাকা উত্তোলন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই অভিযোগে শ্রীপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, দুই কর্মচারী ও পাঁচ সুবিধাভোগীসহ মোট ৯জনকে অভিযুক্ত করে মামলা রুজু হয়েছে।
সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর থানা হেডকোয়ার্টার শাখার ব্যবস্থাপক রেজাউল হক প্রতারণার অভিযোগে বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
স্থানীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে ব্যাংক অ্যাডভাইস ও কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা শাখা সোনালী ব্যাংকের সুবিধাভোগীদের ব্যাক্তিগত ব্যাংক হিসাবসমূহ “স্টপ পেমেন্ট” করা হয়েছে।

শ্রীপুর থানায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্তরা হলেন শ্রীপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রহমান, মাস্টার রোল কর্মচারী তানভীর, অডিটর আরিফুল সলাম, সুবিধাভোগী রনজিত কুমার, সুবল চন্দ্র মোহন্ত, কমল চন্দ্র রায়, ফুলমনী রাণী, সিবেন্দ্র চন্দ্র রায় ও শাহানা আক্তার।
বিলের সুবিধাভোগী রনজিত কুমার, সুবল চন্দ্র মোহন্ত, কমল চন্দ্র রায়, ফুলমনী রাণীকে শনিবার কুড়িগ্রামে তাদের নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন মামলার বিবরণ দিয়ে জানান, শ্রীপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার বজলুর রহমান ও তার দুই কর্মচারী সুকৌশলে সুবিধাভোগীদের অনুকূলে বিভিন্ন অংকের মোট ২ কোটি ৪৬ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ টাকার অ্যাডভাইস ও বিল প্রস্তুত করেন।

১৭ জুন অ্যাডভাইস ও বিল সোনালী ব্যাংক শ্রীপুর থানা হেডকোয়ার্টার শাখায় পাঠানো হয়।

এসবের সাথে বিলের হার্ড ও সফট কপি যুক্ত করা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে শ্রীপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার সাথে ফোনে কথা বলে নিশ্চিতের পর তাদের হিসাবে পরিশোধ করা হয়।
পরে অধিকতর নিশ্চিতের জন্য ১৮ জুন শ্রীপুরের সোনালী ব্যাংক ব্যবস্থাপক নাগেশ্বরী কুড়িগ্রাম সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেন।

সেখান থেকে সুবিধাভোগী ব্যাংক হিসাবধারীদের পরিচয় কৃষক ও গৃহিণী হিসেবে নিশ্চিত হন।
পরে সুবিধাভোগীদের হিসাব “স্টপ পে মেন্ট” করার জন্য অবহিত করেন।

এদিকে, অ্যাডভাইস ও বিলের সত্যতা যাচাই করতে ২৯ জুন ব্যাংক ব্যাবস্থাপকসহ একাধিক কর্মকর্তা শ্রীপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও বিল তৈরীর সাথে যুক্ত কর্মচারীদের সাথে স্বশরীরে কথা বলে অসঙ্গতি চিহ্নিত করেন।
একইদিন উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বিলটি স্থগিত রাখতে ব্যাংক ব্যবস্থাপককে চিঠি দেন।

শ্রীপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রহমান জানান, তাঁর স্বাক্ষর স্ক্যান করে অ্যাডভাইস ও বিল প্রস্তুত করে মাস্টার রোলে কর্মরত তাঁরই অফিসের কম্পিউটার অপারেটর তানভীর জালিয়াতি করেছে।
তিনি ৩০ জুন শ্রীপুর থানায় এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন। বিলের হার্ড কপিতেও স্ক্যান করে তাঁর স্বাক্ষর বসানো হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। ঘটনা পর থেকে তানভীর পলাতক রয়েছে।

সোনালী ব্যাংক লিমিটেড শ্রীপুর থানা হেডকোয়ার্টার শাখার ব্যবস্থাপক রেজাউল হক জানান, হিসাব রক্ষণ অফিসের ওই বিলে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রহমানের সরাসরি স্বাক্ষর ও অ্যাম্বুস সীল দেওয়া ছিল।
ওসি জানান, সুবিধাভোগী রনজিত কুমার, সুবল চন্দ্র মোহন্ত, কমল চন্দ্র রায়, ফুলমনী রাণীকে তাদের নিজ জেলা কুৃড়িগ্রাম থেকে শনিবার গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর কথা