ঢাকা,  শুক্রবার  ১০ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

‘দেশের সমৃদ্ধির জন্য তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে’

প্রকাশিত: ২২:৫০, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘দেশের সমৃদ্ধির জন্য তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে’

সংগৃহিত ছবি

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান  প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। যেহেতু প্রযুক্তি মানুষের জন্য, তাই প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশের সুফল ভোগ করতে হলে প্রতিটি নাগরিককেও প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে বিটিআরসি ভবনে তিন দিনব্যাপী ৮ম বাংলাদেশ স্কুল অব ইন্টারনেট গভর্নেন্স-২০২৪ এর সমাপনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইডের ধরন ভিন্ন। সময়ের সঙ্গে মানুষ তার নিজ প্রয়োজনে প্রযুক্তিকে গ্রহণ করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা চালকবিহীন গাড়ির চেয়ে আমাদের জরুরি প্রয়োজন উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা। দেশের জন্য যেসব প্রযুক্তি প্রয়োজন, সেগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। সেজন্য দেশকে সমৃদ্ধ করতে হলে তরুণ মানবশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

জানা গেছে, বিটিআরসির সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরামের (বিআইজিএফ) উদ্যোগে ২৫-২৭ এপ্রিল এই ইন্টারনেট গভর্নেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মোট ১৪টি সেশনে বিটিআরসির কর্মকর্তারা, টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তিবিদ, গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

৮২ জন ফেলোর অংশগ্রহণে তিন কর্মদিবসে বৈশ্বিক ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) বিগ ডেটা, ডোমেইন নেইম সিস্টেম (ডিএনএস), ইন্টারনেট ইকোসিস্টেম, নিরাপদ ইন্টারনেট প্রযুক্তি, ডেটা প্রটেকশন, টেলিযোগাযোগ ও ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট আইন এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে জিরো ডিজিটাল ডিভাইড সম্পর্কে আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

সেমিনারের তৃতীয় দিনে আইন ও প্রযুক্তি সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মো. আমিনুল হক।

তিনি বলেন, প্রযুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারে ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইন ও নীতিমালার প্রয়োজন হয়।

একই দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনায় বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার শেখ রিয়াজ আহমেদ বলেন, টাওয়ার থেকে নির্গত রেডিয়েশন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, তাই টাওয়ার স্থাপনে জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ) চেয়ারপারসন হাসানুল হক ইনু বলেন, ডিজিটাল বিভক্তি শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা চ্যালেঞ্জ হলেও যেহেতু প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল সাক্ষরতা বাড়াতে হলে ডিজিটাল অবকাঠামো, ডিজিটাল সেবা এবং সেবা গ্রহণের বিষয়গুলো উন্নত ও সহজলভ্য করতে হবে। এছাড়া ডিজিটাল সাক্ষরতা বাড়লে অর্থনৈতিক বৈষম্য, নারী-পুরুষ বৈষম্য কমে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কমিশনের সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ খলিল-উর-রহমান বলেন, তরুণ, নারী ও যুবকদের ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ এবং তাদের মতামতকে গ্রহণ করতে হবে। এআই, বিগ ডাটা, আইওটি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই আমাদের এ প্রযুক্তি পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন করতে শিখতে হবে।

নতুন প্রযুক্তি ডিজিটাল ডিভাইড বাড়িয়ে দেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত বৈষম্যকে চিহ্নিত করে সেগুলোকে সমাধান করতে হবে।

বিআইজিএফ মহাসচিব মোহাম্মদ আবদুল হক অনুর সঞ্চালনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির প্রশাসন বিভাগের মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মুস্তাফিজুর রহমান, বিটিআরসির সচিব নূরুল হাফিজ, এটুআইয়ের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট মো. শাহরিয়ার হাসান জিসান, প্রযুক্তি ও টেলিকম বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।