ঢাকা,  সোমবার  ২৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

এ বছরই বিদ্যুতের আলো ছড়াবে মনপুরায়

প্রকাশিত: ১৪:৫২, ১০ জুলাই ২০২৩

এ বছরই বিদ্যুতের আলো ছড়াবে মনপুরায়

মনপুরা দ্বীপ (ছবি: গুগল ম্যাপ)

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই বিদ্যুতের আলো ছড়াতে পারে মনপুরায়। ভোলা জেলার দক্ষিণ অংশে অবস্থিত সাগরবেষ্টিত উপজেলা মনপুরা। এই উপজেলায় চারটি ইউনিয়নের ২২ গ্রামের লাখ খানেক মানুষ রয়ে গেছেন বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি সূত্র বলছে, আর মাত্র তিন মাসের মধ্যেই তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। আগামী ডিসেম্বরেই বিদ্যুতের আলোতে ঝলমলিয়ে উঠতে পারে এই উপকূলীয় উপজেলা।

ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) জানায়, মনপুরা দ্বীপে শতভাগ বিদ্যুতায়নের জন্য গত বছর ২৫ ওয়েস্টার্ন মনপুরা সোলার পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পটি আগামী ডিসেম্বরে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে জমি কেনা, সয়েল টেস্ট, ইপিসি নিয়োগ ও ৮০ ভাগ বালু ভরাট কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়াও মনপুরা দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় বিতরণ নেটওয়ার্ক স্থাপন ও সম্প্রসারণের কাজ চলমান আছে।

মূলত এখানে একটি হাইব্রিড পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। দিনের জন্য সৌর এবং রাতের জন্য ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। সরাসরি ওয়েস্টার্ন মনপুরা সোলার পাওয়ারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনবে ওজোপাডিকো। তারপর সরকার নির্ধারিত দামে তা সাধারণ গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করা হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সাম্প্রতিক এক বৈঠকে জানানো হয়, হাতিয়া-নিঝুম দ্বীপের পথ ধরে এবার মনপুরার মানুষ ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আসছে। মনপুরায় দ্রুত বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। 

যেখানে কোনোদিন গ্রিড পৌছানো সম্ভব নয়, অথবা গ্রিড নির্মাণ করা ব্যয়বহুল, দেশের সেসব এলাকাকেও বিদ্যুতায়নের আওতায় আনার নির্দেশ দেয় সরকার। এর ধারাবাহিকতায় হাতিয়া, কুতুবদিয়া, নিঝুম দ্বীপ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়।

অফগ্রিড এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা সম্প্রসারণের বিষয়ে পিডিবি থেকে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে, হাতিয়া দ্বীপের বিদ্যুতায়নের কাজ চলমান রয়েছে। কুতুবদিয়া দ্বীপে গত ১২ জুলাই ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র চালু হয়। এর মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করে দ্বিপটিকে বিদ্যুতায়িত করা হয়েছে। এর আগে ১১০০ গ্রাহকের সঙ্গে ১৪০০টি নতুন সংযোগ দেওয়ার  মাধ্যমে বর্তমানে দ্বীপের ২৫০০ গ্রাহক ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। পর্যায়ক্রমে আরও গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে তারা কাজ করছে।

নিঝুম দ্বীপকে হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সংযোগের জন্য সাবমেরিন ক্যাবলের উভয় পাশে ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনসহ ১১ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ১১ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল ও ল্যান্ডিং স্টেশন দুটি কমিশনিংয়ের মাধ্যমে নিঝুম দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। বর্তমানে নিঝুম দ্বীপের ১৭৫ জন গ্রাহককে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের লক্ষ্য শতভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়া। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি খুব দ্রুত মনপুরায় বিদ্যুৎ পৌছে যাবে। এটি শেষ হলে মোটামুটি দেশের সব দুর্গম এলাকা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় চলে আসবে।