ঢাকা,  রোববার  ০৫ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ধুমধাম আয়োজনে প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীর বিয়ে দিলেন এলাকাবাসী

প্রকাশিত: ১১:৩২, ৯ জুলাই ২০২৩

ধুমধাম আয়োজনে প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীর বিয়ে দিলেন এলাকাবাসী

ধুমধাম আয়োজনে প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীর বিয়ে দিলেন এলাকাবাসী

রাজবাড়ীতে ধুমধামের আয়োজনে দুই বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর বিয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী। শুক্রবার (৭ জুলাই) জুম্মার নামাজের পর তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। পরে ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়। বিয়ের যাবতীয় খরচ বহন করেন বরপক্ষের এলাকার লোকজন। আজ রোববার (৯ জুলাই) তাদের বৌভাত অনুষ্ঠিত হবে।

বর পাংশা পৌরসভার সত্যজিৎপুর গ্রামের মৃত কাদের সরদারের ছেলে কাঞ্চন সরদার (২৫) ও কনে কালুখালী উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের দিনমজুর মো. হিলা শেখের মেয়ে পূর্ণিমা খাতুন (১৮)।

জানা যায়, কাঞ্চন সরদার জন্ম থেকেই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। চার ভাই বোনের মধ্যে কাঞ্চন সবার বড়। বাবা মারা যাওয়ার পর কাঞ্চনের মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। সঙ্গে নিয়ে যান তার আরেক বোনকে। কিছুদিন আগে তার মেজ ভাই বিয়ে করেন। কাঞ্চন বড় হলেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার বিয়ে হচ্ছিল না। অন্যদিকে মো. হিলা শেখের চার মেয়ের মধ্যে পূর্ণিমা খাতুন তৃতীয়। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তারও বিয়ে হচ্ছিল না। 

কাঞ্চন সরদারের বিয়ের জন্য মেয়ে না পাওয়ায় ঘটকালি শুরু করেন তার প্রতিবেশী বাচ্চু শেখ। তিনি খুঁজে বের করেন পূর্ণিমা খাতুনকে। পরে মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের দিন ধার্য করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানানো হয় কাঞ্চনের গ্রামবাসীকে।

কাঞ্চনের প্রতিবেশী পাংশা মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিনিয়র সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, কাঞ্চন সরদার ভিক্ষাবৃত্তি করে চলেন। তার আসলে বিয়ে করার মতো  সামর্থ্য নেই। আমরা যখন জানতে পারি যে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে তখন আমরা এলাকাবাসী মিলে চাঁদা তুলে এলাকার সুশীল সমাজের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিয়ের প্রস্তুতি নেই। বিয়ের দিন বর কাঞ্চনসহ ১০ জন বরযাত্রী নিয়ে আমরা কনের বাড়িতে যাই। কনে পূর্ণিমার বাবারও সামর্থ্য না থাকায় বিয়ের সমস্ত খরচ আমরাই বহন করি।

বাচ্চু শেখ বলেন, কাঞ্চন যখন বিয়ের জন্য মেয়ে খুঁজে পাচ্ছিল না বা কেউ তার সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিতে চাচ্ছিল না তখন আমি জানতে পারি ওই গ্রামে পূর্ণিমা নামে একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে রয়েছে। পরে আমি তার বাবার সঙ্গে আলাপ করে বিয়ের দিন ধার্য করি এবং গ্রামের মানুষের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে চাঁদা তুলে বিয়ের আয়োজন করা হয়। পরে শুক্রবার শরীয়ত মোতাবেক তাদের বিয়ে সম্পন্ন করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এখন তারা ভালোই আছে।

তিনি আরও বলেন, রোববার কাঞ্চনের বাড়িতে বৌভাতের আয়োজন করা হয়েছে সেখানে গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে।

পাংশা পৌরসভার মেয়র ওয়াজেদ আলী মাস্টার বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আজ তাদের বৌভাত হওয়ার কথা রয়েছে।