ফাইল ছবি
পাহাড়ে আম চাষ করে লাখপতি হয়েছেন রাঙামাটির কৃষক হেম কুমার চাকমা। কঠোর পরিশ্রমে গড়ে তোলা এ বাগানে চাষ করেছেন বিভিন্ন উন্নত জাতের ২৪ প্রকারের আম। রাঙামাটি কৃষি বিভাগের সহায়তায় এবং নিজের চেষ্টায় কৃষক হেম কুমার চাকমা সফলতার মুখ দেখছেন।
পাহাড়ের পাদদেশে এখন শুধু কৃষির সফলতার গল্প। সরকার ঘোষিত কৃষির সুবিধা কাজে লাগিয়ে রাঙামাটি সদর উপজেলার সাপছড়ি ইউনিয়নের বোধিপুর এলাকার স্থানীয় কৃষক হেম কুমার চাকমা নিজের এক একর জমিতে গড়ে তুলেছেন আম বাগান। হেম কুমার দিনের বেশিরভাগ সময়ে কাটান আম বাগানে। তার আম বাগানে রয়েছে বারী-৩ (আম্রপালি), বারী-৪, হাড়িভাঙা, কিউজা, ব্রুনাইকিং, মিয়াজাকি, কাটিমন, কিংসাপাসহ ২৪ প্রকারের উন্নত জাতের আম।
হেম কুমার চাকমা বাগানের আমকে পোকামুক্ত রাখার জন্য করেছেন ব্যাগিং পদ্ধতি। তিনি জানান, গত বছরে তিনি বাগানে এক লাখ টাকা খরচ করেন। এর বিনিময়ে আম বিক্রয় করেছেন ৪ লাখ টাকা।
কৃষক হেম কুমারের বাগানের প্রতিটি আমের ওজন ২৫০-৭০০ গ্রাম। এই বিদেশি জাতের আমগুলো বাজারে ২৫০-৩০০ টাকা করে কেজি বিক্রয় হচ্ছে। রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৪৭৫ হেক্টর জমি থেকে ৪ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রাঙামাটি জেলায় ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪৩ হাজার ২০০ মেট্রিক টন।
আম চাষি হেম কুমার চাকমা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এক ইঞ্চি জায়গায় যাতে খালি না থাকে। তার কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি জমিতে আম বাগান করেছি। গত বছরের তুলনায় এবার বাগানে আমের উৎপাদন হয়েছে দ্বিগুণ। এবার বাগানে প্রায় ২০০ মণ আমের ফলন হবে।’
হেম কুমার বলেন, ‘গত বছর আম বিক্রি করে ৪ লাখ টাকা পেয়েছি। এবার প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার আম বিক্রি হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে রয়েছে। তাদের একজন ডিগ্রি পাস করে বর্তমানে ফলের ব্যবসা করছে। আর ছোট মেয়ে কলেজে পড়ছে। বাগান পরিচর্যায় আমার স্ত্রী এবং দুই মেয়ে প্রতিনিয়িত সাহায্য করছে।’
রাঙামাটি সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকতা শান্তিময় চাকমা বলেন, হেম কুমার চাকমার আম বাগানে উন্নত জাতের ২৪ প্রকারের আম রয়েছে। আম চাষ করে তিনি সফল চাষি।
রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকতা আবু মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ বাগানের আম রপ্তানির উপযোগী। পাহাড় থেকে আমের কিছু ভ্যারইটি পাঠিয়েছি সিলেকশনের জন্য। এই আমের জাতগুলো যদি সিলেকশন হয়ে যায়, আগামী বছর থেকে পাহাড়ের আম যাবে ইউরোপ, আমেরিকায়। যদি বিদেশে রপ্তানি করা য়ায়, তাহলে কৃষকের মুনাফা অনেক বেড়ে যাবে। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘হেম কুমার চাকামাকে কৃষি বিভাগ থেকে আমা চাষে কারিগরী এবং প্রযুক্তিগতভাবে পরামর্শ দিয়েছি, যাতে করে তিনি আম বাগান করে লাভবান হয়েছেন।’