পাহাড়ে লিচুর বাম্পার ফলন
রসে টইটুম্বর সুস্বাদু ফল লিচু। এ বছর পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ট্রাক করে লিচু যাচ্ছে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়। লিচুর ফলন ভালো হলেও আকারে ছোট হওয়ায় চাষিরা ন্যায্য দাম পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় দেশি, চায়না-২ এবং চায়না-৩ জাতের লিচুর আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর রাঙামাটি জেলার ১ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমি থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ মেট্রিক টন। এতে জেলায় ১৭ হাজার মেট্রিক টন লিচু উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
রাঙামাটি শহরের বনরুপা, সমতাঘাট কলেজ গেটসহ স্থানীয় বাজারে লিচু বিক্রি হচ্ছে। দেশি জাতের প্রতি শত লিচু ৫০ থেকে ১০০ টাকা, চায়না-২ এবং চায়না-৩ জাতের লিচু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লিচু চাষিরা বলছেন, এবার রাঙামাটিতে লিচুর ফলন ভালো। কিন্তু সাইজ ছোট হওয়ায় দাম একটু কম। পাইকারি ক্রেতারা বলছেন, বাজারে লিচুর দাম স্বাভাবিক আছে।
রাঙামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা এলাকার চাষি অর্পণ চাকমা জানান, এ বছর তিনি ২ একর জমিতে এবং বসতবাড়ির আঙিনায় লিচুর আবাদ করেছেন। কিন্তু লিচুর আকার বা সাইজ ছোট হওয়ায় বাজারে দাম কম পাচ্ছেন।
রাঙামাটির লংগদুর কৃষক দিনমোহন চাকমা বলেন, তিনি আজকে বাজারে ১২ হাজার লিচু বিক্রি করেছেন প্রতি শত ৭০ টাকায়। এতে তিনি লাভ করেছেন। শহরের বনরুপার সমতাঘাটে নানিয়ারচর থেকে লিচু বিক্রি করতে আসা কৃষক কালাচান চাকমা বলেন, এ বছর রাঙামাটিতে লিচু ফলন ভালো হয়েছে। এখন দাম একটু কম। তিনি আশা করেন, সামনের দিনগুলোতে ভালো দাম পাবেন।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন জানান, রাঙামাটি থেকে লিচু কিনে তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। চাষিদের কাছ থেকে লিচুর আকার অনুযায়ী শত ৫০ থেকে ৮০ টাকায় কেনেন। এগুলো চট্টগ্রাম নিয়ে গিয়ে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন।
আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী গোলাম রাব্বনী জানান, এখানে লিচুর দাম সুবিধাজনক আছে। সাইজ ভেদে প্রতি শত ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কেনেন চাষিদের কাছ থেকে। তিনি চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়ে ভালো দামে বিক্রি করেন বলে জানান।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, চাষিরা প্রয়োজনমতো এবং সঠিক সময়ে সার প্রয়োগ করেনি, যার ফলে এবার লিচু আকারে ছোট হয়েছে। এবার লিচু নিয়ে জেলায় প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা ব্যবসার সম্ভাবনা রয়েছে।