মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পটকা মাছ খেয়ে বউ-শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে আট বছরের এক শিশু। বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার শহরতলীর উত্তর ভাড়াউড়া এলাকার জয়নাল আবেদিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন, শহরতলীর উত্তর ভাড়াউড়া এলাকার জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী সাহিদা বেগম (৪০) ও পুত্রবধূ নুরুন নাহার (২৫)। চিকিৎসাধীন আছেন তার ছোট ছেলে নাইম (৮)।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
খবর পেয়ে রাতেই সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জ সার্কেলের এএসপি আশরাফুজ্জামান ও শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস ছালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় জানান, ‘গতকাল বুধবার দুপুরে তাদের বাড়িতে বিষাক্ত পটকা মাছ রান্না হয়। মাছগুলো তিনজনই খান। জয়নাল মিয়া ও তার বড় ছেলে রুবেল মিয়া মাছটি না খাওয়ায় তাদের কিছু হয়নি।’
জয়নাল মিয়া জানান, ‘বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা দুপুরের খাবার খান। রাত ৮টার দিকে শরীরে জ্বালাপোড়া শুরু হয়। রাত ১০টার দিকে দু’বার বমি হয়, এর পরপরই মারা যান তারা।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউট জানাচ্ছে, এ মাছে বিষের উপস্থিতি স্থান, ঋতু ও একক ভেদে ভিন্নতা দেখা যায়। বৈশাখ মাসে যে মাছটি বিষাক্ত, কার্তিক মাসে সেটাই বিষহীন হতে পারে। কোনো কোনো মাছের চামড়া আবার কোনোটির মাংস বিষাক্ত হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে পটকা মাছের চামড়া, যকৃত ও ডিম্বাশয়ে বিষের উপস্থিতি বেশি থাকে।
জাপানসহ বিভিন্ন দেশে এ মাছ খেয়ে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটে থাকে। বাংলাদেশেও অনেক মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে। ২০০৮ এ মাছ খেয়ে একটি পরিবারের সবার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে মাছটি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চালানো হয়।
বাংলাদেশ মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউট জানায়, এ মাছ কোথাও কোথাও ট্যাপা মাছ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশের স্বাদু পানির ও লোনা পানির দুই জাতের পটকা মাছ পাওয়া যায়। সিলেট অঞ্চলে মাছটি ফুটকরা মাছ নামে পরিচিত।
গাজীপুর কথা