ঢাকা,  মঙ্গলবার  ৩০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মৃত আসামিকে ৬ বছর পর জীবিত গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১১:৫০, ১২ অক্টোবর ২০২৩

মৃত আসামিকে ৬ বছর পর জীবিত গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার মো. ওসমান আলী।

পলাতক অবস্থায় সাজার ভয়ে কৌশলে আদালতে নিজেকে মৃত প্রমাণ করিয়ে টানা ৬ বছর ধরে পলাতক ছিলেন স্ত্রী হত্যা মামলার আসামি মো. ওসমান আলী (৩৫)। 

বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে গাইবান্ধা ও জামালপুরের যমুনা নদীর দুর্গম চরাঞ্চল থেকে তাকে জীবিত গ্রেপ্তার করেছে জামালপুরের ইসলামপুর থানা পুলিশ। 

এ বিষয়ে জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বুধবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেপ্তার আসামি মো. ওসমান আলী জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার দুর্গম যমুনা নদীর মন্নিয়ারচর এলাকার মো. বাচ্চু ফকিরের ছেলে। ২০১২ সালের ১৯ আগস্ট ওসমান আলী তার স্ত্রী লাকী বেগমের কাছে এক হাজার টাকা চাইলে লাকী বেগম তা দিতে অস্বীকার করেন। পরে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওসমান আলী তার স্ত্রী লাকী বেগমকে ঘর থেকে বের করে টিউবওয়েলের কাছে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। 

তিনি জানান, এরপর ২১ আগস্ট নিহত লাকী বেগমের বাবা মো. আব্দুর রহিম বক্স বাদী হয়ে ইসলামপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত লাকী বেগমদের বাড়িও একই এলাকায়। ইসলামপুর থানা পুলিশ ওই মামলাটি তদন্ত করে আসামি ওসমান আলীর বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলাকালে আসামি পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয় যে, মামলার আসামি ওসমান আলী ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল সকাল ১০টায় কিডনিজনিত রোগে মারা গেছেন। আদালত পুলিশের কাছে ওসমান আলীর মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর ধরে আসামি ওসমান আলী মৃত্যুবরণ করেছে মর্মে বিভিন্ন ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। 

পুলিশ সুপার জানান, ইসলামপুর থানা পুলিশ ওই আসামির মৃত্যুর বিষয়টি আমলে না নিয়ে তার অবস্থান শনাক্তের জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিরবিচ্ছিন্ন অনুসন্ধান করতে থাকে। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিত দাসের দিকনির্দেশনায় ইসলামপুর থানার ওসি সুমন তালুকদারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলা ও ইসলামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম যমুনা নদীর চরাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে পলাতক আসামি ওসমান আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার রাতেই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। 

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার ওসমান আলী তার স্ত্রী লাকী বেগমকে হত্যার দায়ে সাজার ভয়ে কৌশলে আদালতে নিজেকে মৃত প্রমাণ করিয়ে এতদিন পলাতক ছিলেন। তাকে ছয় বছর পর জীবিত উদ্ধার করা হলো। আমার বিশ্বাস তাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে প্রায় হারিয়ে যাওয়া মামলাটি আবার সুষ্ঠু বিচারের জন্য পুনরুজ্জীবিত করতে পেরেছি। এর মাধ্যমে নিহত ভিকটিমের পরিবার ন্যায্য বিচার পাবে বলে আশা করছি।