ঢাকা,  বুধবার  ০৮ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মাদরাসার পরিচালকের বলাৎকারের শিকার হয়ে ১২ বছরের ছাত্রের মৃত্যু!

প্রকাশিত: ১৩:২০, ২৬ আগস্ট ২০২৩

মাদরাসার পরিচালকের বলাৎকারের শিকার হয়ে ১২ বছরের ছাত্রের মৃত্যু!

.

পটুয়াখালীর বাউফলের একটি মাদরাসা পরিচালকের বলাৎকারের শিকার হয়ে এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। 

উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউনিয়নের বড় ডালিমা মদিনাতুল উলুম কাওমিয়া হাফেজিয়া ও নুরানী কিন্ডারগার্টেন মাদরাসা এবং এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ সেলিম গাজীর (৪০) বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। মৃত শিশু শিক্ষার্থীর নাম আল রাফি (১২)। 

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। শিশুটির দাদা আবদুল আলী আকন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, ওই মাদরাসার পরিচালক সেলিম গাজী গত ৪-৫ মাস ধরে শিক্ষার্থী রাফিকে বলাৎকার করে আসছিলেন। ১৪-১৫ দিন আগে রাফি অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।

এরপর রাফির বাবা রেজাউল করিম ছেলে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে তাকে শারীরিক নির্যাতন করায় তার মলদ্বারের ঘা থেকে ক্যানসার হয় এবং তা রক্তে ছড়িয়ে পড়ে।   

পরে রাফি মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায়। সে ওই হাসপাতালে ১২ দিন চিকিৎসাধীন ছিল। 

মৃত রাফির বাবা রেজাউল আকন বলেন, আমরা ছেলে বলে তার প্যাটে ব্যথা করছে। তাই দেশে ডাক্তার দেখাইছি। ডাক্তার বলছে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে। তাই আমি ছেলেকে নিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া যাই। ওই হাসপাতালের ডাক্তাররা আমার ছেলেকে মহাখালী ক্যানসার হাসপাতালে রেফার করে। সেইখানের ডাক্তার বলে অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা? তখন আমার ছেলে বলাৎকারের বিষয়টি জানায়। এরপর ডাক্তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন তার মলদ্বারে ক্যানসার হয়েছে এবং তা সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলেকে মাদরাসায় দিলাম দ্বীন শিক্ষার জন্য। সেখানে এই জঘন্য ঘটনার শিকার হয়ে আমার ছেলেডা মারা গেল। আমি এই নরপিশাচের শাস্তি চাই।

মৃত্যুর আগে রাফি তার মাদরাসা পরিচালকের বিরুদ্ধে একটি ভিডিও বার্তায় বক্তব্য দিয়ে যায়। সেখানে সে বলে, 'কুয়াকাটা গিয়েছিলাম। সেখানে কুয়াকাটা যাওয়ার পর আমি আর আবির নামে একটা পোলা দুজনে একলগে ঘুমাইছি। আর হে ঘুমাইছো অন্যে খাটে। পরে রাইতে ১টায় আমাকে পায়জামা খুলতে বলে। তারপর সেলিম গাজী স্যার দীর্ঘ সময় ধরে আমাকে নির্যাতন করে। হে কইছে, তুই যদি কাউরে কিছু জানাস তোরে মাইরা ফালামু, তোর বাপরে মাইরা ফালামু। ভয়ে আমি কাউরে কিছু বলি নাই। এরপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় আমারে নির্যাতন করছে।'
ঘটনার পর ওই মাদরাসার পরিচালক সেলিম গাজী গা ঢাকা দিয়েছেন। বর্তমানে মাদরাসাটি বন্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট অন্য কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

নাজিরপুর তাঁতেরকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মহাসিন বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

বাউফল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি তিনি অবহিত নন।