ঢাকা,  রোববার  ১৯ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

বাংলাদেশকে এয়ারবাস কেনার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাজ্য: বিমানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:৪২, ৭ মে ২০২৪

বাংলাদেশকে এয়ারবাস কেনার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাজ্য: বিমানমন্ত্রী

সংগৃহিত ছবি

বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশনশিল্পের উন্নয়নে যুক্তরাজ্য একত্রে কাজ করতে চায় বলে জানালেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্য এয়ারবাস কিনতে বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যানি ম্যারি ট্রেভেলেইনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ফারুখ খান।

বিমানমন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে প্রধানত কথা হয়েছে আমাদের অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি নিয়ে প্রশিক্ষণের বিষয়ে। এই প্রশিক্ষণের সঙ্গে বিনিয়োগও হতে পারে, যুক্ত হতে পারে আধুনিক যন্ত্রপাতি। তবে ভবিষ্যতে অ্যাভিয়েশন খাতে কীভাবে বিনিয়োগ করবে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বেসামরিক বিমানখাতে যৌথভাবে কী করা যায়, সেটাই ছিল আমাদের আলোচনার মূলকেন্দ্র। তারা আমাদের নতুন বিমানবন্দর দেখেছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন যে এখানে অনেক কাজ হবে। ইউরোপে তারা এয়ারবাস বানায়, আমাদের বিমানের বহরে বোয়িং আছে। তারা আমাদের কাছে এয়ারবাস বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে। এখন পর্যন্ত যতটুকু জানি, বেশ ভালো প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। এরইমধ্যে বোয়িংও আমাদের ভালো প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। এ বিষয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে একটি মূল্যায়ন কমিটি করা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য যেগুলো ভালো হবে; সেগুলো আমরা বিবেচনা করব।’

ফারুক খান বলেন, ‘এয়ারবাস এরই মধ্যে অর্থনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছে। সেগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এবারই তারা একটি সমঝোতা স্মারকে সই করার কথা বলেছিল, কিন্তু আমরা বলেছি আগে মূল্যায়ন শেষ হোক, তারপর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে।’  

তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া সিকিউরিটি, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং নিয়েও কথা হয়েছে। এসব খাতে তাদের বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে। তারা জানেন, ঢাকা ছাড়াও সিলেট ও কক্সবাজারে আমাদের দুটো বিমানবন্দরে উন্নয়নকাজ চলমান আছে। তারা আরো জানতে পেরেছেন, সৈয়দপুরে একটা বিমান হাব তৈরির চেষ্টা করছি। এসব কারণে তারা বেসামরিক বিমানখাত নিয়ে অনেক আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’  

ভালো প্রস্তাব বলতে তারা কী দিতে চেয়েছে বা বাংলাদেশ কতটি উড়োজাহাজ কিনতে চায় এবং উড়োজাহাজ কিনতে কত টাকা লাগবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক থেকে যে ঋণ দেওয়া হবে তার সুদ, সেই সঙ্গে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোতে বেশ ভালো প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ১০টির মতো এয়ারবাস কিনতে চায়। তবে এ বিমান কিনতে কত টাকা লাগতে পারে, তা নির্ভর করবে কীভাবে প্রস্তাব আসে তার ওপর।’

সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে বিমানমন্ত্রী বলেন, ‘বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের বিষয়ে পত্রিকায় বিভিন্ন কথা এসেছে। আমরা এই মুহূর্তে বিষয়টিকে এত বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি না। তবে বোয়িংয়ের সঙ্গে কথা বলে কারিগরি বিষয়গুলো জানতে বলেছি। এই মুহূর্তে আমরা কোনো সমস্যা পাইনি। এই মুহূর্তে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই। একজন কিংবা দুজনের কথার ওপর ভিত্তি করে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তবে এ বিষয়ে আমরা সতর্ক ও জানার চেষ্টা করছি।’

এ সময় সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে যুক্তরাজ্যেরন প্রতিমন্ত্রী অ্যানি ম্যারি ট্রেভেলেইন বলেন, ‘যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশের সম্পর্ক ও অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তাবিষয়ক অংশীদারত্ব রয়েছে। আমরা অ্যাভিয়েশনখাতে দুই দেশের সম্পর্ক কীভাবে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তা আলোচনা করেছি।’

বাংলাদেশের সার্বিক উন্নতিতে আনন্দ প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। সেক্ষেত্রে অ্যাভিয়েশনশিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ তার বিমানবন্দরগুলোর উন্নয়ন করছে। নতুন টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে। এ কারণে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অ্যাভিয়েশনশিল্পের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের দক্ষতা শেয়ার করতে চাই।’