ঢাকা,  বুধবার  ০৮ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

৫শ বছর আগের সুলতানি আমলের পুরনো এক মসজিদের সন্ধান

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২ মার্চ ২০২০

৫শ বছর আগের সুলতানি আমলের পুরনো এক মসজিদের সন্ধান

চাঁদপুরে জঙ্গলের ভেতর সন্ধান মিলেছে প্রায় ৫শ বছর আগের সুলতানি আমলের পুরনো এক মসজিদের। সদর উপজেলার ৫নং রামপুর ইউনিয়নের ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ি এলাকায় মসজিদটির অবস্থান। স্থানীয়রা জানান, এলাকার প্রয়াত মুরব্বিরা জানিয়ে গিয়েছিলেন এখানে একটি পুরনো স্থাপনা আছে। কিন্তু কেউই সেখানে যেতো না। কারণ, এই মসজিদের উপরে একটি বিশাল আকারের জির গাছ ও তার শেকড়, বাঁশঝাড়, অন্যান্য লতাপাতা এর বাইরের অংশকে ঢেকে রেখেছিল। পরে ওই বাড়ির আজিজ তালুকদার নামে একজন প্রায় ১০/১২ বছর আগে জিরগাছটি কেটে এটিকে দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোন এক কারণে তিনি আর আগ্রহ প্রকাশ করেননি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন বলেন, এটি এতোই ভেতরে ছিল যা সম্পূর্ণ দৃশ্যমান করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে সে সময়ে এটির খবর তিনি স্থানীয় লোকজনকে জানান। কিন্তু ভয়ে কেউ এই প্রত্নতাত্ত্বিক মসজিদটিকে দৃশ্যমান ও সংরক্ষণের উদ্যোগ কেউ আর নেননি। পরবর্তীতে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এবং ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা ডা. দীপু মনি এমপি বিষয়টি জানার পর এটিকে দৃশ্যমান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। পরে আমি মসজিদটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ গ্রহণ করি।

তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি, প্রায় ৫০০ বছর আগে সুলতানি আমলে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। মসজিদের ভেতরে ঢুকে দেখি মসজিদটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট। মসজিদের দেয়ালঘেঁষে চারপাশে ৪টি ছোট মিম্বার রয়েছে, বাইরের দৈর্ঘ্য (উত্তর-দক্ষিণ) মিম্বারসহ ১৬ ফুট এবং বাইরের প্রস্থ (পূর্ব- পশ্চিম) ১৫ ফুট। মসজিদটির ভিতরের দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৭ ফুট ৩ ইঞ্চি। মসজিদটির ১টি মেহরাব রয়েছে এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোঁপ রয়েছে। মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ৩৩ ইঞ্চি। পুরো মসজিদটি পোড়া ইট, বালি, চুনা এবং সুরকি দিয়ে নির্মিত হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।

এমপি ডা. দীপু মনি বলেন, ৪-৫ বছর আগে আমি কোন একটি বইতে আমাদের এলাকায় এমন একটি মসজিদ আছে খবরটি জেনেছিলাম। কিন্তু কোথায় তার অবস্থান সেটি নির্ণয় করতে পারিনি। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বরাবরই বলে যাচ্ছিলাম আমাদের এলাকায় একটি প্রাচীন মসজিদ আছে, এর সন্ধান করুন। শেষ পর্যন্ত তারা মসজিদটিকে সনাক্ত করতে পেরেছে।

তিনি আরও বলেন, মসজিদটি রক্ষায় প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সাথে আমি কথা বলবো।

ওই গ্রামেরই সন্তান প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক রাখি রায় বলেন, জঙ্গল পরিষ্কারের আগে গত মঙ্গলবার স্থানীয় চেয়ারম্যান তাকে মসজিদ এলাকায় নিয়েছেন। তিনি বলেন, মসজিদটি সুলতানি আমলের হতে পারে। তবে এখনো কনফার্ম না। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবেদন করলে মসজিদটি সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে মসজিদটি দেখার জন্য প্রায় প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসছেন। তারা মসজিদটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন