ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মশার যন্ত্রণা থেকে বাঁচুন ঘরোয়া সমাধানে

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১৪ মার্চ ২০২১

মশার যন্ত্রণা থেকে বাঁচুন ঘরোয়া সমাধানে

বর্তমানে লাগামহীনভাবে বাড়ছে মশার উপদ্রব। আকারে অতি ক্ষুদ্র হলেও এই পতঙ্গটির যন্ত্রণায় রাতের ঘুম হারাম অনেকেরই। শুধু কি তাই, দিনের বেলায়ও এখন এর যন্ত্রণা থেকে রক্ষা নেই। এতটুকু হলেও দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা যেত। কিন্তু বিরক্তিকর উপদ্রবের পাশাপাশি মশা বহন করে নানা ধরনে সংক্রামক রোগজীবাণু। যা অনেক সময় মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। 

মশার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, পীত জ্বর, জিকা ভাইরাস প্রভৃতি মারাত্মক রোগ সংক্রমিত হয়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মশা তাড়ানোর সহজ ও ঘরোয়া উপায়গুলো:

# পুদিনা পাতার ব্যবহার: পুদিনা পাতা ব্যবহার হয় নানারকম খাবার তৈরিতে। উপকারী এই পাতা আমাদের হজমশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি কিন্তু মশা তাড়াতেও বেশ কার্যকরী। একটি গ্লাসে অল্প পানি নিয়ে তাতে পুদিনার কয়েকটি গাছ রেখে দিন খাবার টেবিলে। তিনদিন পরপর পানি বদলে দেবেন। জার্নাল অফ বায়োরিসোর্স টেকনোলোজির গবেষণা বলছে, পুদিনা পাতা মশা দূরে রাখতে সাহায্য করে। মশা ছাড়াও আরও অনেক পোকা-মাকড় দূরে থাকে পুদিনার গন্ধে। পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে সেই পানির গন্ধ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। এতেও মশা পালাবে। 

# হলুদ বাতি: আলোর প্রতি নানা রকম পতঙ্গের টান আছে এমনটাই জানি আমরা। কিন্তু আপনি জানেন কি, ঘরে হলুদ আলো জ্বাললে মশার উপদ্রব কমে? বৈদ্যুতিক বাতির চারপাশে হলুদ সেলোফন জড়িয়ে দিতে পারেন। এতে আলোর রং হবে হলুদ। আর এই হলুদ আলোর কারণে মশা দূরে থাকবে। এই রঙের আলো প্রতি সন্ধ্যায় জ্বাললে মশার আক্রমণ থেকে অনেকটাই মুক্তি মিলবে। 

# চা পাতার ব্যবহার: চা পাতা কী কাজে লাগে? প্রশ্ন শুনে অবাক হয়ে ভাবছেন, চা পাতা তো চা তৈরির কাজে লাগে! কিন্তু চা তৈরি ছাড়াও চা পাতার আছে আরও অনেক উপকারী ব্যবহার। তার মধ্যে একটি হলো মশার উপদ্রব কমানো। সেজন্য আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো, চা পাতা ব্যবহারের পর ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। এমনভাবে শুকাবেন যেন তাতে পানি না থাকে। এরপর এই চা পাতা ধুনো হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। শুকনো চা পাতা পোড়ালে ঘরের সব মশা-মাছি দূর হবে দ্রুতই।

# মশা তাড়াবে লেবু ও লবঙ্গ: এই সহজ উপায় অনেকেরই অজানা। প্রথমে একটি বড় লেবু নিয়ে দুই ভাগ করে কেটে নিন। এর ভেতরের অংশে লবঙ্গ গেঁথে নিন অনেকগুলো। লবঙ্গের ফুলের অংশটুকু শুধু বের হয়ে থাকবে। বাকি অংশ লেবুর ভেতরে গেঁথে দিন। এবার লেবুর টুকরোগুলো একটি পরিষ্কার থালায় করে কক্ষের এককোণে রেখে দিন। এতে খুব সহজেই মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে পারবেন। লেবু ও লবঙ্গ এভাবে রেখে দিতে পারেন জানালার গ্রিলেও। এতে করে মশা ভেতরে ঢুকবে না।

# ফুল স্পিডে ফ্যান চালু রাখা: মশা ভীষণ হালকা একটি পতঙ্গ। তাই ঘরের সিলিং ফ্যানটি যদি ফুল স্পিডে ছেড়ে রাখেন তবে মশা আর কাছে ঘেঁষতে পারবে না। মশার ওড়ার গতিবেগের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই ফ্যানের ঘোরার গতি বেশি। তাই মশা সহজেই ফ্যানের ব্লেডের কাছে চলে যায়। মশার উপদ্রব বেড়ে গেলে ফুল স্পিডে ফ্যান ছেড়ে দিন।

# কর্পূর ও রসুনের ব্যবহার: মশা কর্পূরের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। একটি ৫০ গ্রামের কর্পূরের ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এরপর এটি ঘরের কোণে রেখে দিন। তাৎক্ষণিকভাবেই মশা গায়েব হয়ে যাবে। দুই দিন পর পানি পরিবর্তন করে নিন। এছাড়া রসুনের স্প্রে মশা তাড়াতে খুবই কার্যকারী প্রাকৃতিক উপায়। ৫ ভাগ পানিতে ১ ভাগ রসুনের রস মেশান। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে শরীরের যেসব স্থানে মশারা কামড়াতে পারে সেসব স্থানে স্প্রে করুন। এতে করে যে কোন ধরণের রক্ত চোষারা আপনার ধারে কাছেও আসবে না।

গাজীপুর কথা