ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কালীগঞ্জের নাগরী ইউনিয়নে ঐতিহাসিক সেইন্ট নিকোলাস চার্চ

প্রকাশিত: ১৭:৪৩, ৩ এপ্রিল ২০২১

কালীগঞ্জের নাগরী ইউনিয়নে ঐতিহাসিক সেইন্ট নিকোলাস চার্চ

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান সেইন্ট নিকোলাস চার্চ (St. Nicolas church) অবস্থিত। ১৯৬৩ সালে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে নির্মিত এই ঐতিহাসিক চার্চ বাংলাদেশের বৃহত্তম খ্রিষ্টান মিশনারীয় চার্চের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। সেইন্ট নিকোলাস চার্চ হতে কালীগঞ্জের আঞ্চলিক বাংলা ভাষায় প্রথম দ্বিভাষীয় বাইবেল অনুদিত হয়। এমনকি প্রথম দ্বিভাষিক অভিধান ও গদ্য বই প্রকাশিত হয় এই চার্চ থেকেই।

ষোড়শ শতাব্দীর শেষের দিকে পর্তুগীজ খ্রিষ্টানরা নিজেদের আস্তানা ছেড়ে চলে যাবার পর সম্রাট জাহাঙ্গীরের আদেশে এই গির্জাটি স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে বাঙ্গালি কারিগরদের মাধ্যমে নতুন একটি গির্জা ভবন নির্মাণ করা হয়। দুই দেশীয় স্থাপত্যের সংমিশ্রণে তৈরী গির্জার উপরের ছাদ ছয়টি অষ্টকোণাকৃতির সেমি-গোথিক স্টাইলে বানানো হয়েছে। লোহার ১২ টি খুঁটির উপর দাঁড়ানো এক তালা এই গির্জায় প্রবেশ করার জন্য রয়েছে চারটি প্রবেশ পথ। আর প্রধান প্রবেশ দ্বারের সামনে রয়েছে দণ্ডায়মান যিশুর একটি মূর্তি। এছাড়া গির্জার বারান্দাযুক্ত প্রবেশ পথ, সমবেত উপাসনার প্রার্থনা ঘর, একক উপাসনা কক্ষ, তিনটি সেমি-সার্কুলার প্রবেশ পথ এবং বৃহৎ আকৃতির হল ঘরের স্থাপত্যশৈলী নজর কাড়ার মতো। গির্জাকে কেন্দ্র করে ১৯১০ সালে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু হয়, এটিকে বর্তমানে নিম্ন মাধ্যমিক ইংরেজি বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়েছে।

কিভাবে যাবেন
সেইন্ট নিকোলাস চার্চে যাওয়ার জন্য গাজীপুরের টঙ্গী আসতে হবে। টঙ্গী হতে কালীগঞ্জের বাস কিংবা সিএনজি দিয়ে আহসান উল্লাহ মাষ্টার ফ্লাইওভার পেরিয়ে নলছটা সেতু হয়ে সেইন্ট নিকোলাস চার্চে যাওয়া যায়। নলছটা সেতু থেকে সেইন্ট নিকোলাস চার্চের দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার।

কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে একদিনে সেইন্ট নিকোলাস চার্চ ঘুরে ফিরে আসা যায়। তবে প্রয়োজনে রাত্রিযাপনের জন্য গাজীপুরে শহরের চৌরাস্তা ও কোণাবাড়ি বাস স্ট্যান্ডের কাছে আল মদিনা আবাসিক হোটেল, হোটেল জলি, হোটেল অনামিকা, জাপান আবাসিক হোটেল, হোটেল ড্রিম ল্যান্ড আবাসিক, হোটেল এলিজা ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি আবাসিক হোটেলে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া গাজীপুরে সারাহ, সোহাগ পল্লী, ভাওয়াল, গ্রিন ভিউ, স্প্রিং ভ্যালী, ছুটি ও নক্ষত্র বাড়ির মতো বেশকিছু অত্যাধুনিক রিসোর্ট রয়েছে। তবে রিসোর্টে থাকার ক্ষেত্রে আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখতে হবে।

কোথায় খাবেন
গাজীপুরে কথাকলি, ক্যাফে কস্তুরি, স্কাই ওয়ার্ড, হোটেল বাংলা ঘর ও রূপসা রেস্টুরেন্ট বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া সেন্ট নিকোলাস চার্চের কাছে নাগরী বাজারে হালকা চা-নাস্তা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
 
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
গাজীপুরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ভাওয়াল রাজবাড়ী, ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক, নুহাশ পল্লী, দ্যা বেস ক্যাম্প বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

গাজীপুর কথা