ঢাকা,  মঙ্গলবার  ২১ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কাপাসিয়ায় ইজারার শর্ত ভেঙে খাজনা আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ১ মে ২০২৪

কাপাসিয়ায় ইজারার শর্ত ভেঙে খাজনা আদায়ের অভিযোগ

সংগৃহিত ছবি

সারা দেশের বৃহৎ পাঁচটি গরু-ছাগলের হাটের মধ্যে অন্যতম একটি কাপাসিয়া উপজেলার আমরাইদ বাজার। ইজারাদার অনিয়মের মাধ্যমে এ বাজারের খাজনা আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই ইজারাদার দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী তার নাম ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্য দিবসের মধ্যে ১০ শতাংশ আয়কর ও ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় গত সোমবার স্থানীয় ব্যবসায়ী তৌকির সিকদার গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে পুনরায় দরপত্রের আবেদন জানিয়েছেন। তাছাড়া ওই ইজারাদার তার লোকজনের মাধ্যমে খাস কালেকশনের রশিদ ব্যবহার করে ইজারার টাকা আদায় করছেন বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ওই বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, চলতি বছরের ১৩ মার্চ ১৪৩১ বাংলা সনের জন্য তিনজন দরপত্র দাতার মধ্যে আগামী এক বছরের জন্য উপজেলার আমরাইদ বাজারটি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মজিবুর রহমানকে ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। ১০ শতাংশ আয়কর ও ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ যার সর্বমোট মূল্য ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত দরপ্রত্রের ৩ নং শর্ত অনুযায়ী সর্বোচ্চ দরদাতার নাম ঘোষণার পরবর্তী সাত কার্য দিবসের মধ্যে আয়কর ও  ভ্যাটসহ সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করে পুনরায় দরপত্রের শর্তারোপ করা হয়েছিল। ওই ইজারাদার সে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়ে ১৮ মার্চ গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে ৯০ দিনের সময়ের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী পরিচালক ফারজানা আক্তার লাবণী স্বাক্ষরিত গত ২১ এপ্রিল ওই ইজারাদারকে পরবর্তী সাত কার্য দিবসের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যেও ইজারাদার প্রায় চার কোটি টাকা পরিশোধ করে বাকী টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। গত ২৩ এপ্রিল সরকারি লোক দিয়ে খাস কালেকশন করা হলেও মঙ্গলবার রশিদ ব্যবহার করে ওই ইজারাদারের লোকজন খাজনা আদায় করেছেন।

তাছাড়া প্রতিটি গরু, ছাগল ও মহিষ ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে গত বছরের তুলনায় তিন থেকে পাঁচশত টাকা অতিরিক্ত আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ভাসমান দোকানী ও ফলমূল বিক্রেতাদের কাছ থেকেও অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ইজারাদার মো. মজিবুর রহমান যুগান্তরকে জানান, তিনি সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে আদালতে সময় চেয়ে একটি আবেদন করেছেন। আগামী ১৯ মে সুপ্রিম কোটে এর শুনানির দিন ধার্য করেছেন। তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে নিজের লোক দিয়েই ইজারা আদায় করছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম লুৎফর রহমান জানান, হাট-বাজার ইজারা বিষয়ক কমিটির প্রধান হচ্ছেন- উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। কিন্তু ১ম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার কারণে তার সঙ্গে সভা করতে না পারায় এবং আদালতে একটি মামলা চলমান থাকায় ওই ইজারাদার খাজনা আদায় করছেন। অচিরেই বিষয়টি সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।

জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে যুগান্তরকে জানান, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।