রাফা ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণে নিল ইসরায়েল
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত রাফা ক্রসিংয়ের দখল নিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
গাজা ও মিশরে সঙ্গে সংযুক্ত পূর্ব রাফা ক্রসিং নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। রাতভর অভিযান শেষে মঙ্গলবার রাফা ক্রসিংয়ের গাজান এলাকাটি দখলে নেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই ইসরায়েল রাফায় এ আক্রমণ চালিয়েছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আইডিএফ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত রাতে আইডিএফের সেনারা রাফা ক্রসিংয়ের গাজা অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এই মুহূর্তে ক্রসিংয়ের যাবতীয় অপারেশনাল কাজ নিয়ন্ত্রণ করছে আমাদের সেনারা ক্রসিংয়ের আশেপাশে সন্ত্রাসীদের কোনো গোপন আস্তানা রয়েছে কিনা তার অনুসন্ধান করছে। এই অনুসন্ধান শুধু ক্রসিংয়ের গাজা অংশে চলছে।
এদিকে সোমবার (৬ মে) যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্ততাকারী দেশগুলোর প্রস্তাবে সম্মত হয়। তবে এ প্রস্তাব ইসরায়েলে মূল দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ বলে প্রস্তাব প্রত্যাখান করে ইসরায়েল। এ সময় রাফা আক্রমণের ঘোষণাও দেয় দেশটি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, তাদের একটি ট্যাংক ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করছে। এলাকাটির দখল নেয়া ওই ট্যাংক থেকে ইসরায়েলি পতাকা উড়তেও দেখা যায়।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, রাতারাতি ট্যাংক ও বিমান হামলা চালিয়ে রাফাহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা ও বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। অন্তত চারটি বাড়িতে আঘাত হানলে কমপক্ষে ২০ ফিলিস্তিনি নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়।
গাজা বর্ডার ক্রসিংয়ের এক মুখপাত্র হিশাম এদওয়ান বলেন, রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ হয়ে গেলে গাজা উপতক্যার বাসিন্দাদের মৃত্যু ছাড়া আর কোনো গতি থাকবে না। অবরুদ্ধ রাফাহ শহরে প্রবেশ ও মিসরে যাতায়াতের একমাত্র পথ এই ক্রসিং। এ ক্রসিং দিয়েই ত্রাণ সাহায্য পৌঁছায় গাজায়।
দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই রাফা আক্রমণের ঘোষণা দিয়ে আসছিল ইসরায়েল। মিশরের সীমান্তবর্তী রাফায় আশ্রয় নিয়েছিল প্রায় ১০ লাখ উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনি নাগরিক। যতক্ষণ না তারা ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য একটি মানবিক পরিকল্পনা তৈরি করতে পারছে ইসরায়েলকে রাফাতে সামরিক অভিযান না চালানোর জন্য চাপ দিয়ে আসছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে সাম্প্রতিক হামলার বিষয়ে ইসরায়েল দাবি করেছে যে সামরিক অভিযানের এলাকা থেকে বেশিরভাগ লোককে আগেই সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আইডিএফের তথ্যমতে, রাতভর অভিযানে প্রায় ২০ জন বন্দুকধারী নিহত হয় এবং সৈন্যরা তিনটি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ টানেল শ্যাফ্টের দখলে নেয়। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো সেনা হতাহত হয়নি বলেও জানানো হয়েছে। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী আরো জানায়, সেনারা এখন ওই এলাকা তল্লাশি করছে এবং আরো অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।