ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

রোহিঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ৯ জুন ২০২২

রোহিঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ

রোহিঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশ

কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা হলেও রোহিঙ্গাদের আবাস গাড়ার পর ক্রমশ সুনাম হারাচ্ছে। গাছপালা নিধন, পাহাড় কর্তনে পরিবেশ-জলবায়ু পড়ছে হুমকির মুখে। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের আবাসন তৈরির জন্য কাটছে হয়েছে প্রচুর গাছ, নষ্ট হয়েছে পাহাড়ে স্বাভাবিক আকৃতি। বৃষ্টি-অতিবৃষ্টির ফলে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। রোহিঙ্গাদের অবস্থানের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। কারণ হচ্ছে, ওটা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মধ্যে থাকা একটা এলাকা। ওখানে বন উজাড় হয়ে যাওয়ার কারণে ইতোমধ্যেই গরম বেড়ে গেছে। কক্সবাজারের পাহাড়গুলো ধসে পড়বে, নদীগুলোও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছবে। বন উজাড় হওয়ার ফলে সেখানে হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্য। এগুলোর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব ওই এলাকায় পড়ছে তা আরও তীব্রতর হবে।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকের কাছে আদরণীয় স্থানটি ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হবে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া বনগুলো পর্যটন এলাকায় অবস্থিত নয়। তবে ধারাবাহিকভাবে কক্সবাজারের পানি দূষিত হওয়া শুরু করবে, পানির স্বল্পতা দেখা দেবে। কারণ রোহিঙ্গাদের পানি সরবরাহ করতে হচ্ছে। ফলে কক্সবাজার শহরে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে পর্যটকরা গিয়ে পানি পাবেন না। তখন অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেতের বিষয়টি আমলে নিয়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে পরিবেশ, বন এবং জীব-বৈচিত্র্যের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। নতুন করে আর ক্ষতি হতে দেওয়া হবে না। বিশেষজ্ঞ দিয়ে ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণ করে, তা পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ১০ হাজার গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন পানি উত্তোলন করায় পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে বিভিন্ন স্থানে পানি সংকট প্রকট হচ্ছে; ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। 

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ধ্বংসই নয়, রোহিঙ্গা সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করা না গেলে নানাভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করায় রোহিঙ্গা পরিবারগুলোতে ঘটে চলেছে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ। জনসংখ্যা বাড়তে থাকলে আরও বেশি মাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পরিবেশ-প্রকৃতিতেও। প্রকৃতি রক্ষাই শুধু নয়, বাংলাদেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার অধিকার রক্ষার জন্যও সমস্যাটি সমাধানের বিকল্প নেই।