ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

জাবির নির্মাণাধীন গ্রন্থাগারে মিলবে বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা

প্রকাশিত: ১৫:২০, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

জাবির নির্মাণাধীন গ্রন্থাগারে মিলবে বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা

জাবির নির্মাণাধীন গ্রন্থাগারের নকশা।

দেশের একমাত্র আবাসিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও নেই পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। যে কারণে পড়ালেখার উপযুক্ত পরিবেশ খুঁজতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

তবে ২০১৮ সালে অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে এই দুর্দশা ঘুচবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হবে ছয়তলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন গ্রন্থাগার। এই গ্রন্থাগার বিশ্বমানের হবে বলে প্রত্যাশা প্রকল্প ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছয়টি আবাসিক হল নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের কাজ। আর এই দ্বিতীয় ধাপের আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার। গ্রন্থাগারটি নির্মিত হলে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী একসঙ্গে লেখাপড়া করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন। 

প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, ২ লাখ ৫০ হাজার স্কয়ার ফিট আয়তনের ছয়তলা এই গ্রন্থাগারে থাকবে বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা। প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে সেবা দেওয়ার উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন গ্রন্থাগার। পাঠ্যসূচি অনুযায়ী বই, রেফারেন্স বই, গবেষণা প্রবন্ধের ভাণ্ডার থাকবে এই গ্রন্থাগারে। পাশাপাশি গবেষণার জন্য রেফারেন্স বই, শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক এবং শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির তিন লাখ ভলিউম বইয়ের সংগ্রহশালা হবে এটি।

এছাড়া গ্রন্থাগারে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী ও শিশুদের জন্য স্বতন্ত্র সংগ্রহশালা থাকবে বলেও জানিয়েছেন নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা।

শুধুমাত্র ব্যক্তিগত পড়ালেখা কিংবা বই সংগ্রহ নয়, এখানে থাকবে রিডিং জোন। এই রিডিং জোনে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য থাকবে আলাদা পাঠকক্ষ। পাশাপাশি রেফারেন্স রিডিং, ওপেন গ্রুপ স্টাডি, গ্রুপ ডিসকাশন ও রিসার্চ কনসাল্টেশনের জন্য থাকবে পৃথক পাঠকক্ষ।

আর টেক জোনে ইলেকট্রনিক ওয়ার্কস্টেশনসহ ই-লাইব্রেরিতে মিলবে আন্তর্জাতিক লাইব্রেরি চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুবিধা। বিশ্বের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থা ও প্রকাশকের ডাটাবেইসে যুক্ত হয়ে বিরল বা দুষ্প্রাপ্য প্রকাশনার ডিজিটাল সংস্করণ পড়তে পারবেন শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও সেন্ট্রাল ক্যাটালগ ও ডাটাবেজ সেন্টার, উচ্চমানের অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং স্টুডিও ও রেফারেন্স সেকশন, অডিও-ভিজুয়াল কিওস্ক, আর্টিফিশিয়াল ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের জন্য স্টুডিও এবং ডিজিটাল ম্যাপিং ও জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম অধ্যয়নের জন্য ভূ-স্থানিক লাইব্রেরি থাকবে।

আর স্পেশাল জোনে থাকবে অফিস রেকর্ড ও আর্কাইভ সংরক্ষণের জন্য পৃথক ব্যবস্থাপনা। থাকবে সংগ্রহশালা, আর্ট গ্যালারি এবং এক্সিবিশন হল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী বিপ্লব সরকার বলেন, আমরা চাই দ্রুত গ্রন্থাগারের নির্মানকাজ শেষে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। যাতে করে আমাদের এই সিট পাওয়ার ভোগান্তি লাঘব হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই গ্রন্থাগার নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৭৮৬ টাকা। বেসিন পাওয়ার লিমিটেড (এমবিপিএল) এবং অ্যাডভানস টেকনোলজি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড (এটিসিএল) যৌথভাবে এ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন বলেন, নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই গ্রন্থাগার নির্মাণ হলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মনোরম পরিবেশ তৈরি হবে।