ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

দুই বোন আত্মসাৎ করেন ৬৪ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ২৪ আগস্ট ২০২২

দুই বোন আত্মসাৎ করেন ৬৪ কোটি টাকা

শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদ

অর্থ পাচারের দায়ে অভিযুক্ত পিকে হালদারের অন্যতম সহযোগী পিপলস্ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন নিজে ও তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে প্রায় দুইশ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এর মধ্যে তার দুই মেয়ে শারমিন আহমেদ ও তানিয়া আহমেদের নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন ৬৪ কোটি।

তারা দুই বোন প্রায় ২০ বছর ধরে কানাডায় অবস্থান করছেন।
পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ২৮ জুলাই তারা দেশে আসেন। বুধবার (২৪ আগস্ট) দেশত্যাগের পরিকল্পনা ছিল তাদের।

এর মধ্যেই গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে রাজধানীর ধানমন্ডি ও শ্যামলী এলাকা থেকে দুই বোন শারমিন ও তানিয়াকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, পি কে হালদারের অন্যতম সহযোগী পিপলস্ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত থাকাকালে নিজে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

চলতি বছরের ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ খেলাপিদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে হাইকোর্ট। পরে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ১৯ এপ্রিল আদালত তাদেরকে গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেয়।  

খন্দকার আল মঈন বলেন, র‌্যাব জানতে পারে যে, প্রতিষ্ঠানের ২ জন ঋণ খেলাপি বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। র‌্যাব এ ঋণ খেলাপিদের আটক করতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৪ আগস্ট) ভোরে তাদের আটক করা হয়।

তারা বাবা সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিনের মাধ্যমে ঋণ নেন। শারমিন ৩১ কেটি ও তানিয়া ৩৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তারা গত ২৮ জুলাই কানাডা থেকে বাংলাদেশে আসেন এবং আজ পুনরায় কানাডার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করছিলেন।

র‌্যাব জানায়, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস্ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ২০১৯ সালে পিপলস্ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় আদালত পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করে।

প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৬ হাজার ব্যক্তি/শ্রেণীর আমানতকারী রয়েছে এবং বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীর প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা আটকা পড়েছে। এই টাকার পুরোটাই প্রতিষ্ঠানটির ঋণ হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা রয়েছে। যার একটি বড় অংশ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা বিভিন্ন নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

সম্প্রতি দেশের আর্থিক খাতে আলোচিত নাম প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার। তিনি দেশের আর্থিক খাতের শীর্ষ দখলদার ও খেলাপিদের মধ্যে অন্যতম একজন। গত ১৪ মে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে পলাতক পিকে হালদার ভারতে গ্রেফতার হন।

আরো পড়ুন