সংগৃহিত ছবি
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেছেন, বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তবে বিএনপি ও তাদের দোসরদের যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে জনগণ প্রস্তুত রয়েছে। বিএনপি যদি আবারও ২০১৩-১৪ সালের মতো সহিংস ও জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি করে তাহলে জনগণের জানমাল রক্ষায় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ রাজপথে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত রয়েছে। বিএনপির এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে জনগণ।
বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে শরীয়তপুর জেলা পরিষদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির আন্দোলনের নামে প্রোপাগান্ডা অতীতে যেমন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি তেমনি ভবিষ্যতেও পারবে না। দুঃশাসনের কথা যখন বিএনপি বলে তখন দেশের মানুষ হাসে। দুঃশাসন বলতে যা বুঝায় সেটা বিএনপির আমলেই হয়েছে। এ দেশের মানুষ তা ভুলেনি। বিএনপি নেতাদের দুঃশাসনের কথা বলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখা উচিত। দেশের মানুষ বিএনপির সেই অপশাসন ও দুঃশাসনে আর ফিরে যেতে চায় না। জনগণ এখন বুঝে গেছে বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিই বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করেছে।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী বলেন, টানা ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপির ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হয়নি। আওয়ামী লীগ প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপির উত্থান হয়েছে। এদের নেতাকর্মীদের মাথায় শুধু গুম আর খুন। ক্ষমতায় থাকতে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারা আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। গ্রেনেড হামলা থেকে শুরু করে আন্দোলনের নামে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। জাতীয় নেতাদের নামে প্লেট চুরির মামলা পর্যন্ত দিয়েছে। এ দেশের জনগণ তা ভুলেনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলে সারা দেশের মতো শরীয়তপুর সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু হয়েছে। নড়িয়ায় এখন আর নদীভাঙন নেই। জয় বাংলা অ্যাভিনিউ ও সোনার অ্যাভিনিউ নামে পর্যটন এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। পদ্মা সেতুর নওডোবা পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুর হয়ে আলুর বাজার ফেরীঘাট পর্যন্ত চার লেন সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন হয়েছে। ননএমপিওভুক্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও হয়েছে। আজকে শরীয়তপুরের কৃষিপণ্য ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হচ্ছে। সবদিক দিয়ে শরীয়তপুর এগিয়ে যাচ্ছে। এসব সম্ভব হয়েছে একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী আছেন বলেই।
এনামুল হক শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে কখনোই তৃণমূল নেতাকর্মীরা আপস করেন না। দেশের জনগণই আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ রহমান, পুলিশ সুপার মো. সাইফুল হক, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল হাদি মোহাম্মদ শাহ্ পরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট পারভেজ রহমান জন।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেন, নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাশেদউজ্জামান, প্যানেল চেয়ারম্যান এমএ কাইউম পাইক, আসমা আক্তার, আব্রাহাম লিংকন, সদস্য বোরহান মুন্সী, সৈয়দ ইকবাল হোসেন (ওসমান মীর) প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে শরীয়তপুরের ভাষা সৈনিক, জেলা পরিষদের বিদায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসেনসহ মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু কর্নার, বিজয় একাত্তর ও লাভ গার্ডেন উদ্বোধন করা হয়।
