২১ বছরের নাহিদ হাসান -ছবি: সংগৃহীত
নাহিদ হাসান। তার বয়স ২১ বছর চলমান। কিন্তু দেখতে মনে হবে ১২ বছরের এক শিশু। তার এই প্রতিবন্ধকতা কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। তাকে দেখতে ছোট শিশুর মতো হলেও মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে এখন উচ্চ শিক্ষা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
নাহিদ হাসান উচ্চতায় ৪ ফিট। জন্ম ঝিনাইদহের হরিনাকুন্ডু উপজেলার ভেড়াখালী গ্রামে। তার বাবা আরিফ মালিথা একজন কৃষক।
মঙ্গলবার (৩০ মে) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন নাহিদ হাসান। তিনি উপজেলার জোড়াদহ কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৪.০০ পেয়ে ২০২২ সালে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার ইচ্ছা, লেখাপড়া শেষ করে প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি করবেন।
নাহিদ হাসান বলেন, ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে 'এ' গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। এখনো রেজাল্ট আসেনি। আমার একটা চাকরি হলে ভালো হতো। আমি বাবা মার বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। সরকার যদি আমার সহযোগিতা করে, তাহলে আমি লেখাপড়া করে যেতে পারতাম।
নাহিদের বাবা আরিফ মালিথা বলেন, ৭-৮ বছর বয়স থেকে আমার ছেলের এমন অবস্থা দেখছি। ওর থেকে যারা ছোট, তারাও বড় হয়ে যাচ্ছে। এমন দেখে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে তাকে ডাক্তার দেখাই। তারা জানিয়েছেন এটা হরমন জনিত কারণে হয়েছে। এ সমস্যার চিকিৎসা করতে ১৪ লাখ টাকা লাগবে। কিন্তু তারপরও তারা কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না যে ঠিক হবে কি-না। পরে টাকা জোগাড় করা সম্ভব হলো না আর চিকিৎসাও করাতে পারলাম না।
তিনি আরো বলেন, নাহিদ এখন পড়ালেখা করে এগিয়ে যাচ্ছে। সমাজের কেউ যদি সহযোগিতা করে তাহলে সে আরো এগিয়ে যাবে। আমার দুই মেয়ে এক ছেলে। সে যদি কোনো সরকারি চাকরি পায় তাহলে তার একটা ভবিষ্যৎ হবে।