ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, হাসপাতাল ছেড়ে পালালেন পরিচালক-চিকিৎসক

প্রকাশিত: ১৭:৩০, ২৪ জানুয়ারি ২০২২

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, হাসপাতাল ছেড়ে পালালেন পরিচালক-চিকিৎসক

খুলনার খানজাহান আলী হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ইলিয়াস ফকির নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রোগী ইলিয়াস ফকির দাকোপ উপজেলার জয়নগর গ্রামের হাবিবুর রহমান ফকিরের ছেলে ও গল্লামারি সেতুর কাছে ফুটপাতে পাকা কলা বিক্রেতা।

রোববার বিকেলে মৃত্যুর পরপরই হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসকরা পালিয়ে যান। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য পুলিশ হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে। এ ঘটনায় পুলিশ হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ও একজন সেবিকাকে আটক করেছে।

নিহতের স্ত্রী পারভীন জানান, পাঁচ মাস আগে ইলিয়াস ফকিরের হার্নিয়ার সমস্যা হয়। সে সময় তিনি ওই এলাকার গ্রাম্য চিকিৎসককে দেখিয়ে ওষুধ খেতে থাকেন। তাতে সুস্থ না হওয়ায় তিনি মহানগরীর মোহাম্মাদ নগরের ফার্মাসিস্ট মনিরের সঙ্গে কথা বলেন। তখন ইলিয়াসকে খানজাহান আলী হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী রোববার দুপুর ১টার দিকে বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনা হয়।

বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোস্তফা কামাল, ডা. মোর্শেদ ও ইন্টার্নি ডা. মোহন রোগীকে নিয়ে অপারেশনের জন্য কক্ষে প্রবেশ করেন। অস্ত্রপ্রচার সফল হয়েছে বলে চিকিৎসকরা রোগীর স্বজনদের জানান। এর কিছুক্ষণ পর ইলিয়াস ফকিরের এক আত্মীয় গিয়ে দেখে তার খিচুনি উঠেছে। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তার পরিবারের এক সদস্যকে ডেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিয়ে ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক পালিয়ে যান।

নিহতের বেয়াই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হার্নিয়া অপারেশনে কোনো রোগী মারা যান না। রোগীর কথা জিজ্ঞাসা করা মাত্রই হাসপাতালের পরিচালক ও অন্যান্য চিকিৎসকরা একে একে পালিয়ে যেতে থাকেন। অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে ইলিয়াসকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসেন।

নিহতের ভাইয়ের মেয়ে বিথি বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হার্নিয়া অপারেশন করতে আসেন আমার চাচা। ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে অপারেশন করতে নেয়ার দেড় ঘণ্টা পর অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করা হয়। তখন আমার ফুফু চাচার চোখ বড় বড় হয়ে যেতে দেখেন। ডাক্তাররা কেউ ছিলেন না। পরে তিনি মারা যান।

খুলনা থানার ওসি (তদন্ত) মো. আবু হানিফ জানান, ইলিয়াজ ফকিরের মৃত্যুর পর আত্মীয়-স্বজনরা হাসপাতালের দু’জন কর্মচারীকে আটকে রেখেছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদেরকে থানায় নেয়া হয়েছে এবং এ ঘটনা সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে থেকে আবু নাসের হাসপাতালের ডেপুটি ডাইরেক্টর ডা. মোর্শেদের নির্দেশনা সম্বলিত একটি নির্দেশনাপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। ভুল চিকিৎসায় মৃত ইলিয়াস ফকির নগরীর গল্লামারী রাইসা ক্লিনিকের পাশে ফলের ব্যবসা করতেন বলে জানা গে‌ছে।

গাজীপুর কথা