ছবি: সংগৃহীত
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হোসেন্দী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের চেষ্টা, অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশবাদী হয়ে মামলা করেছে।
মামলায় হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ২০০ জনকে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে সংশ্লিষ্ট থানায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন গজারিয়া থানায় কর্মরত পুলিশের উপ পরিদর্শক জাহিদ হাসান। গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলার এজাহারে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো দেড়শো থেকে দুইশো জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাসুম (২৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (৮ মে) উপজেলা নির্বাচনে হোসেন্দী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। দুপুর ২টার দিকে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে কেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের চেষ্টা চালান হোসেন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু। এসময় ছিনিয়ে নেওয়া হয় ভোটের সিল।
এ ঘটনায় ৩টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে আবারও ভোটগ্রহণ শুরু হলেও মিঠুর কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এসময় ইটের আঘাতের শামীম, সোহাগ নামের দুই কনস্টেবলসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে পুলিশ প্রতিরোধের জন্য অবস্থান নিয়ে পাল্টা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
মুহুর্মুহু গুলিতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দ্বিতীয় দফা বন্ধ হয়ে যায় ভোটগ্রহণ। ইটপাটকেলের আঘাতে ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি। পরে ব্যাপক পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭৪ রাউন্ড রাবার বুলেট ও বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বিকেল ৫টার দিকে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
একইদিন সকাল সোয়া ৯টার দিকে হোসেন্দীর ভবানিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানাকে মারধরের ঘটনা ঘটে মিঠুর নেতৃত্বে। এসময় সেই দৃশ্য ধারণ করতে গেলে তার ভাই গাজীপুর আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইকবাল হক স্বপন ও তাদের ভাতিজা তানভির হক তুরিনসহ আরও ১০-১৫ জন দৈনিক মানবজমিনের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি গোলজার হোসেনের ওপর হামলা করেন। সেই ঘটনায়ও গজারিয়া থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।