ঢাকা,  রোববার  ০৫ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

নতুন ঘর পাচ্ছেন বেদেপল্লির সেই আবু বকর

প্রকাশিত: ১৭:১৪, ৩০ আগস্ট ২০২৩

নতুন ঘর পাচ্ছেন বেদেপল্লির সেই আবু বকর

আবু বকরের বাড়ি পরিদর্শন করেন মো. মইনুল ইসলাম

পদে পদে বৈষম্য আর বঞ্চনার শিকার হয়ে বেদেপল্লি থেকে উঠে আসেন আবু বকর। নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে অঙ্গীভূত সদস্য হিসেবে চাকরি করছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে। তবে সামান্য বেতনের চাকরিতে ৮ সদস্যের পরিবারের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয় তাকে। এমনকি পরিবারের সদস্যদের থাকার জন্য ঘরে নেই পর্যাপ্ত জায়গা।

আবু বকরকে নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে “বৈষম্য-বঞ্চনা আবু বকরকে দিয়েছে ‘খ্রিস্টের সম্মান’।” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদটি নজরে আসে শরীয়তপুরের আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট মো. মইনুল ইসলামের। পরে তিনি বুধবার আবু বকরের বাড়ি ও বেদেপল্লি পরিদর্শন করে বাহিনী থেকে নতুন একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়াও তিনি বেদেপল্লির শিশুদের খেলাধুলা করার জন্য ফুটবল উপহার দেন। এ সময় সেখানকার মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাবেন বলেও নিশ্চিত করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৭ বছর বয়সী আবু বকর একজন বেদে সম্প্রদায়ের ছেলে। বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার মুন্সীর হাটের বেদেপল্লিতে। ওই পল্লির আব্দুল সাত্তার আকন ও জোসনা বেগম দম্পত্তির ছোট ছেলে তিনি। এছাড়াও তার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী তামান্না বেগম, মেয়ে ফাতেমা, ভাই আরিফ সরদার, দুই বোন রেশমা ও রোকসানা।

আবু বকর ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ বলে সব জায়গায় তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শিকার হয়েছি। তবুও দমে যাইনি, পড়াশোনা শেষ করে আনসার বাহিনীতে চাকরি করছি। তবে যা বেতন পাই এতে সংসার চালানো খুব কষ্ট হয়ে যায়। আমাকে নিয়ে সাংবাদিক ভাই নিউজ করার পরে জেলা কমান্ড্যান্ট মইনুল ইসলাম স্যার আমার বাড়িতে এসে বাড়িঘর পরিদর্শন শেষে আনসার বাহিনী থেকে একটি নতুন ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি আজ ভীষণ খুশি।

আবু বকর সিদ্দিকের বাবা সাত্তার সরদার বলেন, আমার ছেলের অল্প বেতনের টাকায় আমাদের পুরো সংসার চলে। এমনকি সকলের মাথা গোজার পর্যাপ্ত জায়গাটুকু নেই। খুব কষ্ট করে একটি ঘরে সবাই থাকতাম। আজ জেলা থেকে স্যারেরা এসে নতুন ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ভীষণ খুশি হয়েছি।

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট মইনুল ইসলাম বলেন, আবু বকর আমাদের আনসার বাহিনীর একজন সদস্য। তার জীবনের গল্প সত্যিই অবাক করার মতো। তার জীবন সংক্রান্ত এবং আর্থিক সমস্যার একটি নিউজ আমার সামনে আসলে আমি আজ তার বাড়িতে যাই। আমার মনে হয়েছে তার পরিবারের জন্য একটি নতুন ঘর প্রয়োজন। তাহলে তিনি তার পরিবার নিয়ে আরেকটু ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের আনসার বাহিনীর পক্ষ থেকে তার জন্য একটি নতুন ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।