সিলেট কোতোয়ালি থানায় আটক অবৈধ চিনির বস্তা।
অবৈধ পথে আসা ভারতীয় চিনিতে সয়লাব সিলেটের বাজার। টনের পর টন চিনি এবং চোরাকারবারিকে আটকের পরও কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না চিনির চোরাচালান। ভারতীয় চিনির দৌরাত্ম্যে দেশে উৎপাদিত চিনি বাজার হারাচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বস্তার পর বস্তা সারি সারি রাখা। দেখলে মনে হবে কোনো গুদামের ছবি। বাস্তবে ভারতীয় চিনিভর্তি বস্তাগুলো সিলেট কোতোয়ালি থানায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে। ভারত থেকে চোরাইপথে চিনি এনে দেশীয় নানা ব্র্যান্ডের চিনির বস্তায় ভরে বাজারজাত করছেন চোরাকারবারিরা। থানায় আটক হওয়া এমন বস্তায় ভরা ভারতীয় চিনিও আটকের তালিকায় পাওয়া গেলো।
এসএমপির উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, সিলেট মহানগর পুলিশের হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত অবৈধ পথে আসা ১৪৪ মেট্রিক টন চিনি জব্দ করা হয়। এ সময়ে ৫০টি মামলা এবং ৮২ চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জেলার জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, এবং বিয়ানীবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী শতাধিক স্থান দিয়ে চোরাই পণ্য সিলেটে প্রবেশ করে বলে জানান এসএমপির উপকমিশনার।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, শুধু চলতি মাসের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত জেলার ৮ থানা এলাকা থেকে ৭৯ মেট্রিক টন চিনি জব্দ এবং ৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জব্দ করা চিনি আদালতের মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করা হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে প্রচুর চিনি দেশে প্রবেশ করছে।
দেশে চিনি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের ডিলার হাবিবুর রহমান জানান, এভাবে অবৈধ পথে ভারতীয় চিনিতে সিলেটের বাজার সয়লাব হয়ে যাওয়ায় দেশীয় নামকরা প্রতিষ্ঠাগুলোতে উৎপাদিত চিনি বাজার হারাচ্ছে।
বিজিবি সিলেট সেক্টরের আওতাধীন সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি ব্যাটালিয়নের সীমান্ত এলাকায় গত ১ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ২১০ মেট্রিক টন ভারতীয় চিনি জব্দ করা হয়েছে, যার মূল্য প্রায় দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকা।