ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কৃষি প্রণোদনার মাল্টা চারায় লাখপতি যুবক

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৩০ আগস্ট ২০২০

কৃষি প্রণোদনার মাল্টা চারায় লাখপতি যুবক

যশোরের চৌগাছায় সরকারি প্রণোদনার ৫৯ টি মাল্টার চারা থেকে লাখপতি হয়েছেন বারিউল ইসলাম নামে এক যুবক। বারিউল উপজেলার ধুলিয়ানী ইউপির আজমত গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে।

সরকারের ৫৯ টি মাল্টা চারা থেকে তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। তাকে দেখে এলাকার অনেক যুবক আত্মকর্মসংস্থানের ব্যাপারে উৎসাহ পাচ্ছেন। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলা গড়তে বর্তমান সরকারের সুপ্রসারিত কৃষিনীতি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সারা দেশে কাজ করে যাচ্ছে সরকারের কৃষি বিভাগ। 

গতানুগতিক চাষ পদ্ধতি পরিবর্তনে দেশের প্রতিটি উপজেলায় আগ্রহী কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে সার, বীজ, ফলের চারাসহ বিভিন্ন উপকরণ। তার অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের জুন মাসে বারিউলকে ৫৯টি মাল্টার ছোট ছোট চারা দেয়া হয়। সেই চারা থেকে বারি আজ লাখপতি। 

শনিবার বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার ধুলিয়ানী ইউপির শাহাজাদপুর মাঠে গেলে কথা হয় বারিউল ইসলামের সঙ্গে। 

তিনি জানান, চারাগুলো নিজের ১০ কাটা জমিতে রোপণ করেন। এলাকায় মাল্টার চারার চাহিদার কথা চিন্তা করে তিনি নিজ বাগানের মাল্টা গাছ থেকে কলমের মাধ্যমে নার্সারি তৈরি করেন। একই সঙ্গে তার নার্সারিতে মাল্টা ও কমলাসহ বিভিন্ন প্রকার ফলদ বৃক্ষের চারা তৈরি করেন। 

তিনি আরো জানান, মাল্টা ধরা শুরু করলে এলাকায় মাল্টা চারার ব্যাপক চাহিদা হয়। গত বছর চারটি গাছের মাল্টা তিনি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। আর এ বছর গাছে যে পরিমান মাল্টা রয়েছে তা এক লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে তিনি জানান। তবে গত দু’বছরে তিনি প্রায় ২ লাখ টাকার মাল্টার চারা (কলম) বিক্রি করেছেন। চলতি মৌসুমে তিনি আরো তিন-চার লাখ টাকার চারা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। 

বারিউল বলেন, আমার সব সফলতা উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে। চারা না পেলে হয়ত মাল্টা চাষই করতাম না।  

মাল্টা ও কমলার চারা কিনে রবিউল ইসলাম, আনিছুর রহমান, বাবলুর রহমান, মেহেদী হাসান, আবু সাঈদসহ অনেকেই মাল্টা বাগান করেছেন। বারিউল নিজেও আরো ১ বিঘা জমিতে নতুন বাগান করেছেন। তার বাগানে প্রচুর মাল্টা ধরেছে। বারিউলের বাগানের মাল্টার কথা শুনে অনেক দূর থেকে বাগান দেখতে আসছেন। বাগান দেখে অনুপ্রারিত হয়ে অনেকেই তার কাছ থেকে চারা ক্রয় করছেন। 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দিন বলেন, এখানকার মাটি, আবহাওয়া আর পরিবেশ অনুকূলে থাকায় সরকারি সহযোগিতায় কৃষকরা চাষাবাদে যেমন এনেছেন বৈচিত্র, তেমনি এগিয়ে যাচ্ছেন। যা অর্থনীতির চাকায় যোগ হচ্ছে বিশাল এক অর্জন। 

তিনি আরো বলেন, উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। আর এই মাল্টা চাষের বিপ্লবকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে বড় ধরণের ভূমিকা রাখছে তরুণরা। পরিকল্পিত ও প্রযুক্তি নির্ভর ফলের চাষাবাদে দেশের অর্থনীতিতে যেমন ভূমিকা রাখছে তেমনি বেকার তরুণদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে। চাকরির নির্ধারিত জগৎ ছেড়ে তারা নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই রচনা করছেন। 

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন