অযত্নে অবহেলায় জাতির জনকের স্বাধীনতা ষোষণার ওয়্যারলেস স্টেশন। নষ্ট হয়েছে এর যন্ত্রপাতি। ফৌজদারহাটের ঐতিহাসিক স্টেশনটি সংরক্ষণের দাবি চট্টগ্রামবাসীর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার বেতার বার্তাটি ফৌজদারহাট ওয়্যারলেস স্টেশনে পৌঁছে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ভোরে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত বিভিন্ন জাহাজের মাধ্যমে বার্তাটি তাৎক্ষণিক পাঠানো হয়েছিল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।
ঐতিহাসিক সেই মুহূর্তের কথা তুলে ধরেন ২৫ মার্চ রাতে ফৌজদারহাট ওয়্যারলেস স্টেশনে দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তা।
সলিমপুরের তৎকালীন ওয়্যারলেস টেকনিশিয়ান আবদুল কাদের বলেন, “বঙ্গবন্ধুর মেসেস, এটি পাঠানোর জন্য আমরা রিস্ক নিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা এই ওয়্যারলেসের মাধ্যমে এই বিল্ডিং থেকে সারা বাংলাদেশে এবং বর্হিঃবিশ্বে পাঠানো হয়েছিল। ২৫ মার্চেই আমি এটি রিসিপ করি, ১১ ঘণ্টা পর এগুলো পেপার-পত্রিকায় প্রকাশ করে।”
অন্যদিকে বার্তাটি পাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, “সাইকেলে করে একটি ছেলে আমাদের একটি চিঠি দিয়ে যায়। মেসেসটা ঢাকা মগবাজার ওয়্যারলেস কেন্দ্রে যায়, ওখান থেকে গোটা বাংলাদেশে ট্রান্সমিট করা হয়। রাতের মধ্যেই স্বাধীনতা ঘোষণা প্রচার হয়ে যায়। তারপর হান্নান ভাই বেতার থেকে পাঠ করেন।”
সলিমপুরের যে ওয়্যারলেস স্টেশনে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা গ্রহণ করা হয়েছিল তা এখন পরিত্যক্ত। অযত্ন-অবহেলায় পরিণত হয়েছে গোশালায়। নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি।
তৎকালীন ওয়্যারলেস টেকনিশিয়ান আবদুল কাদের বলেন, “আমি দাবি জানাচ্ছি একটি ইনস্টিটিউট করে নতুন টেকনোলজি ঢুকিয়ে এগুলো যেন সংরক্ষণ করা হয়।”
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ঐতিহাসিক স্থাপনাটি সংরক্ষণের দাবি চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের।
গাজীপুর কথা