সংগৃহিত ছবি
শ্রীপুরে মাওনা চৌরাস্তা বাজারে উঠতে শুরু করেছে দেশীয় মৌসুমী ফল লিচু দাম অত্যান্ত চড়া। প্রতি ১০০ পিস লিচু ব্যবসায়ীরা সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। সোমবার (২৯ মে) সকালে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর নিচে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে এই লিচু বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এখন দেশি ছাড়া অন্য জাতের লিচু বাজারে আসেনি। বোম্বাইসহ অন্য জাতের লিচুগুলো আর সপ্তাহখানেক পর বাজারে আসবে। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার লিচুর উৎপাদন কিছুটা কম। তাই মৌসুমজুড়েই লিচুর দাম বেশি থাকতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর নিচে ডালিতে সাজিয়ে রেখেছিলেন লিচুর আটি ব্যবসায়ী তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপির বাড়ি গ্রামের কাজল মিয়া। তিনি বলেন, লিচুর আটি এনে থোকায় থোকায় সাজিয়ে রেখেছেন। এখন প্রতি ১০০ পিস লিচুর দাম ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ৩৫০ টাকার কম দামে কেউ লিচু বিক্রি করছেন না।
মৌসুমের নতুন ফল লিচু কিনতে আসা মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর নিচে লায়লা আক্তার নামে এক গৃহিনী বলেন, মৌসুমী নতুন ফল লিচু বাজারে উঠেছে একটু দাম কম থাকার কথা, ব্যবসায়ীরা আকাশছোঁয়া দাম চাচ্ছেন। বাচ্চাটা লিচু খুব পছন্দ করে। তাই বাজারে প্রথম লিচু কিনতে এসে দেখি লিচুর প্রচুর দাম।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা থেকে আসা শফিকুল ইসলাম ভান্ডারী উপজেলার কেওয়া গ্রামে এসে ভাড়া বাড়িতে উঠে লিচুর বাগান কিনে ব্যবসা করছেন, তিনি মাসখানেক আগেই ৭ লাখ টাকার বাগান কিনেছেন। লিচু কম থাকলেও চড়া দামে বাগান নিতে হয়েছে। লাভ করতে হলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে। তা না হলে তিনি ক্ষতির মুখে পড়বেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, শ্রীপুরে এ বছর ৭২৮ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হয়েছে। লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন। বৃষ্টি না হওয়ায় অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে ঝরে পড়েছে লিচুর গুটি। অন্যদিকে লিচুর ফুল থেকে গুটি আসা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা মোট ১২০ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। এবার সেই সময় পাওয়া যায়নি। হঠাৎ করেই গরম পড়ে গেছে। ফলে ঠিকমত লিচুর গুটি ধরেনি। বৈরি আবহাওয়ায় এবার লিচুর উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে মূলত উন্নতমানের জাত হিসেবে বোম্বাই, মাদ্রাজি, কাদমি, বেদানা, চায়না-৩, বারি-১, বারি-২ ও বারি-৩ জাতের লিচু উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে বোম্বাই লিচুর চাহিদা বেশি। বৈরী আবহাওয়ায় এই জাতের লিচুরই বেশি ক্ষতি হয়েছে। খরায় লিচুর মানও খারাপ হয়ে গেছে। সপ্তাহখানে পর উন্নতজাতের লিচুগুলো বাজারে উঠবে।