ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে

প্রকাশিত: ১৪:৫১, ৯ মে ২০২২

পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে

দেশজুড়ে চলমান ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট ও বিক্ষোভের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন  শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। আজ সোমবার (৯ মে) তিনি প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দেন। একই দিন শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী চান্না জয়াসুমনাও পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার (৯ মে) শ্রীলঙ্কান গণমাধ্যম ডেইলি মিরর অনলাইনের এক প্রতিবেদনে তার পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। 
এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, কিছু সময় আগেই তিনি পদত্যাগ করেছেন। দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের কারণে ফের কারফিউ জারি করা হয়েছে। এর মধ্যেই তার পদত্যাগের খবর সামনে এলো। রাজধানী কলম্বো এবং দেশের অন্যান্য শহরে সরকারপন্থি লোকজনের সঙ্গে সরকারবিরোধীদের সংঘর্ষ চলছে।
এর আগে গত শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে জানিয়েছিলেন যে, তার ভাই অর্থাৎ দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মতি জানিয়েছেন।
অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা সংকটে জর্জরিত দেশটিতে অনেকদিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের অনুরোধ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তবে প্রেসিডেন্ট নিজেও পদত্যাগের চাপে রয়েছেন। কারণ শুরু থেকেই প্রেসিডেন্টকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করছে সাধারণ মানুষ।
প্রেসিডেন্টের অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। কলম্বো পেজের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গোতাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্ট হাউজে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে মাহিন্দা রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে রাজি হন।
শ্রীলঙ্কায় সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। নির্বাচনকে সামনে রেখে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। এটাকে তখনকার সরকার নির্বাচনী কৌশল হিসেবেই ধরে নিয়েছিল। সে সময়ে অর্থমন্ত্রী মঙ্গলা সামারাবিরা মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা ও অন্যান্য শুল্ক বাতিল করার বিপজ্জনক প্রতিশ্রুতির বিষয়ে একটি ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছিলেন।
অর্থনৈতিক সংকটে এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রাজাপাকসের পরিবার। হিমশিম খাচ্ছেন মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা মেটাতে। ঋণের জন্য শরণাপন্ন হচ্ছেন আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, চীন ও ভারতসহ অন্যান্য দাতাদের কাছে। এরই মধ্যে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে দেশটি। যা ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর প্রথম ঘটনা। দেশের শেয়ারবাজারও শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে।
গত ২০ বছরের মধ্যে ১২ বছরই শ্রীলঙ্কার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেছেন রাজাপাকসে পরিবারের সদস্যরা। এসময় তারা স্বৈরতন্ত্রের তকমা পেয়েছেন। এর আগে তার ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তার অন্য দুই ভাই দেশটির বন্দর ও কৃষি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছেন। এভাবে পাকসে পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য সরকারের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

গাজীপুর কথা