পাঁচ দশক আগে স্থানীয় এক পিরের মুরিদ হন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার জয়নাল আবেদীন (৬৬)। এরপর তিন দশক আগে একদিন পিরের আদেশে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় জুতা পরতে গিয়ে দেরি হয় তাঁর। এ সময় ওই পির তাঁকে আদেশ দেন, ‘তুমি আর জুতা পরো না।’ সেই থেকে জুতা ছাড়াই জীবনযাপন করছেন জয়নাল আবেদীন।
জয়নাল আবেদীনের বাড়ি উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়নের মহানন্দাপুর বাশারচালা গ্রামে।
জানা যায়, ২০০০ সালে চাকরি থেকে অবসরের পর জয়নাল আবেদীন দুবার কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ওই ইউনিয়নে দুইবার প্যানেল চেয়ারম্যান, দুইবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। এ ছাড়া ইউনিয়ন মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিলেন একবার। বর্তমানে পোলট্রি খাবারের ব্যবসা পরিচালনা করেন। এসব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন, ব্যক্তি জীবন, ধর্মীয় ও সামাজিক নানা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন জুতা ছাড়াই।
কোনো মৌসুমেই তিনি জুতা পরেন না। নিজ বাড়ি, অফিস-আদালত, মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে শুরু করে সব জায়গায় জুতা ছাড়া চলাফেরা করেন। এ কারণে এলাকায় এখন তিনি জুতা ছাড়া মেম্বার হিসেবেই বেশি পরিচিত।
পরিবারের সদস্যরাও তাঁর এই ব্যতিক্রম জীবনযাপন মেনে নিয়েছেন।
জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ইউনিয়ন, উপজেলা পরিষদ, ইউএনও অফিস এমনকি সচিবালয় পর্যন্তও আমি জুতা ছাড়াই গিয়েছি। কোথাও কখনো বিড়ম্বনা বা তিরস্কারের শিকার হইনি। কারণ সবাই জানেন, আমি জুতা ছাড়াই চলাফেরা করি।’
এক প্রশ্নের জবাবে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমার পির সাহেব এখনো জীবিত রয়েছেন। তিনি যদি পুনরায় আদেশ দেন, তবে আমি জুতা পরব।’
কচুয়া গ্রামের বাসিন্দা হায়দার আল মামুন বলেন, শুনেছি তিনি পির ধরা মানুষ। পিরের নির্দেশেই জুতা ছাড়া চলাফেরা করেন। তবে জয়নাল মেম্বার ভালো মানুষও বটে। বিপদ-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো তাঁর একটা ভালো গুণ।
এ বিষয়ে কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. দুলাল হোসেন বলেন, ‘জয়নাল আবেদীন পিরের প্রকৃত শিষ্যের উদাহরণ। গুরুর আদেশ মান্য করতেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে জুতা ছাড়া চলাফেরা করছেন। আজকাল এমন শিষ্য পাওয়া যায় না।’
গাজীপুর কথা