ঢাকা,  শুক্রবার  ০৩ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা জসিম হত্যায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ১৯:৫১, ২৯ মে ২০২৩

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা জসিম হত্যায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রতীকী ছবি

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাছান জসিমকে গুলি করে হত্যার মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন জানান, এ মামলায় ১২ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগপত্র জমা দেয়। এরমধ্যে ৪ জন মারা গেছেন। অন্য ৮ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। রায়ের সময় ৭ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হিজবুর রহমান স্বপন পলাতক রয়েছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ৪৩ বছর বয়সী আলী হোসেন বাচ্চু, ৪৩ বছর বয়সী মোস্তফা, ৪৮ বছর বয়সী খোকন, ৬৮ বছর বয়সী আবুল হোসেন, ৬১ বছর বয়সী মোবারক উল্যা, ২৬ বছর বয়সী কবির হোসেন রিপন, ৬১ বছর বয়সী জাফর আহম্মদ ও ৪০ বছর বয়সী হিজবুর রহমান স্বপন।

প্রাণ হারানো মেহেদী হাছান জসিম চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শ্রীরামপুর গ্রামের মফিজ উল্যার সঙ্গে একই বাড়ির মোবারক উল্যা ও আলী হোসেন বাচ্চুদের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে মোবারকরা ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি মফিজ ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করেন। এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। এরপর থেকে মফিজের মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি দেন, না করলে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। এজন্য মফিজ ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে না যেতে পেরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকতেন।

একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ মোবারকদের করা মামলাটি উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরনবী তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে মফিজের ছেলে হাসান জসিমের নাম বাদ দেয়ায় মোবারকরা চরম ক্ষিপ্ত হন। এ কারণে জসিম ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের রাধাপুর গ্রামে আত্মীয় গোলাম মাওলার বাড়িতে আত্মগোপনে যান। জসিমের সঙ্গে তার বড় ভাই আবদুল হাই ও গোলাম মাওলার ভাই মাসুদ একই কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল।

ওইদিন গভীর রাতে আসামিরা জানালার গ্রিল ভেঙ্গে ঘরে ঢুকেন। এসময় তারা জসিমের বুকে গুলি করেন। তাকে বাঁচানোর জন্য অন্যরা এগিয়ে আসলে আসামিরা গুলি করার হুমকি দিয়ে তাদের পিটিয়ে আহত করেন। পরে জসিমকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন মফিজ বাদী হয়ে সদর থানায় মোবারকসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আবু নাছের আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেয়।