ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মাইক্রোবাসের পেছনে বসায় প্রাণে বাঁচেন তানভীর

প্রকাশিত: ১১:১১, ৩০ জুলাই ২০২২

মাইক্রোবাসের পেছনে বসায় প্রাণে বাঁচেন তানভীর

আহত তানভীর হাসান হৃদয়

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেন-মাইক্রোবাস সংঘর্ষের ঘটনায় ১১ জন নিহত হলেও বেঁচে ফিরেছেন ৭ জন। তাদের মধ্যে আহত উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তানভীর হাসান হৃদয় (১৮) শুনালেন বেঁচে ফেরার গল্প।

হৃদয়ের মাথায় ব্যান্ডেজ। চোখের ওপরে সেলাই পড়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের মেঝেতে শুয়ে ভয়াল সেই ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।

হৃদয় বলেন, ‘ খৈয়াছড়া ঝরনা দেখে ফেরার পথে আমিসহ চারজন মাইক্রোবাসের পেছনের আসনে বসেছিলাম। গাড়িতে বমির ভাব হয় বলে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ ধাক্কা ও বিকট শব্দে জেগে উঠি। মাথায় প্রচণ্ড ব্যথা পাই। পেছনের সিটে ছিলাম বলে বেঁচে গেছি।’

তিনি জানান, তারা হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারের একটি কোচিং সেন্টার থেকে ‘পিকনিক’ করতে খৈয়াছড়া ঝরনায় গিয়েছিলেন। ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-ছাত্রসহ ১৬ জন এ আয়োজনে ছিলেন। চালক ও সহকারী মিলে মাইক্রোবাসটিতে মোট ১৮ জন ছিলেন।

হাসপাতালে উপস্থিত হৃদয়ের চাচা আবদুস সাত্তার জানান, হৃদয় আমান বাজার এলাকার জিয়াউর রহমান কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়েন। তারা অনেকে মিলে পিকনিকে গিয়েছিল।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের মেঝেতে হৃদয়ের পাশে আরও চারজন ভর্তি আছেন। তাদের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তারা বলেছেন, অন্যদের তুলনায় হৃদয়ের শারীরিক অবস্থা ভালো।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং সেন্টারের শিক্ষকরা মিরসরাইয়ে খৈয়াছড়া পানির ঝরনা দেখতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দুপুরে খৈয়াছড়া রেল স্টেশনের কাছে লেভেল ক্রসিং অতিক্রম করার সময় মাইক্রোবাসটির সঙ্গে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রেন মহানগর প্রভাতীর ধাক্কা লাগে। ট্রেনটি প্রায় এক কিলোমিটার দূরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় মাইক্রোবাসটিকে। দুমড়ে-মুচড়ে যায় যানটি। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১১ জন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছয়জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠান।

নিহতরা হলেন উপজেলার আজিম সাবরেজিস্ট্রার বাড়ির হাজি মো. ইউসুফের ছেলে মাইক্রোচালক গোলাম মোস্তফা নিরু (২৬), চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইলিয়াছ ভুট্টোর ছেলে মোহাম্মদ হাসান (১৭), একই ইউনিয়নের খোন্দকার পাড়ার আবদুল হামিদের ছেলে জিয়াউল হক সজীব (২২), ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আজিজ মেম্বার বাড়ির জানে আলমের ছেলে ওয়াহিদুল আলম জিসান (২৩), মজিদ আব্বাস চৌধুরী বাড়ির বাদশা চৌধুরীর ছেলে শিক্ষক রিদুয়ান চৌধুরী (২২), পারভেজের ছেলে সাগর (১৭) ও একই এলাকার আবদুল ওয়াদুদ মাস্টার বাড়ির আবদুল মাবুদের ছেলে ইকবাল হোসেন মারুফ (১৭), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মোজাফফর আহমেদের ছেলে মোসহাব আহমেদ হিসাম (১৬), আব্দুল আজিজ বাড়ির মৃত পারভেজের ছেলে তাসমির হাসান (১৭), মনসুর আলমের ছেলে মো. মাহিম (১৭), ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবু মুসা খানের বাড়ির মোতাহের হোসেনের ছেলে মোস্তফা মাসুদ রাকিব (১৯)।