ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

তালাক দিলেন স্বামী, ৫ মাসের সন্তান নিয়ে বিপাকে সেতু

প্রকাশিত: ১৩:৩৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

তালাক দিলেন স্বামী, ৫ মাসের সন্তান নিয়ে বিপাকে সেতু

লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাওয়ায় ৫ মাসের সন্তানসহ নাজিয়া ইসলাম সেতু নামে এক গৃহবধূকে তালাক দিয়েছে তার স্বামী শাহজালাল আহমেদ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ গ্রামে।

অভিযুক্ত শাহজালাল আহম্মেদ ঐ গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে। ভুক্তভোগী নাজিয়া ইসলাম সেতু একই উপজেলার সররাবাদ গ্রামের গোলাম মোস্তফা মিয়ার মেয়ে। ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারি পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাদের।

সেতুর পরিবার জানায়, নারায়ণপুর সরাফত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ও নরসিংদী মডেল কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পান সেতু। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করার সময় বিয়ের প্রস্তাব আসে। লেখাপড়া বন্ধ না করার প্রতিশ্রুতিতে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় শাহজালাল ও সেতুর। বিয়ের পর ভালোই চলছিলো সংসার। কিছুদিন পর সেতুর গর্ভে সন্তান এলে সেই সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেন শ্বশুর ফরিদ মিয়া। কিন্তু এতে রাজি হননি সেতু।

এছাড়া কোচিং প্রায় শেষ হয়ে আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিতে চান তিনি। এসব জেনে ক্ষিপ্ত হন ফরিদ মিয়া, পরে স্বামী শাহজালালও লেখাপড়া ছাড়তে চাপ দেন। একই সঙ্গে সেতুকে সারাদিন নানা অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যস্ত রাখতেন এবং শারিরিক-মানসিক নির্যাতন করতেন। সন্তান জন্মের পর আরো বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। সারাদিন দুধের শিশুকে মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে রাখতো শাহজালাল ও তার পরিবার। এত কিছুর পরও সেতু স্বামীর সংসার করতে থাকেন। এরই মধ্যে শাহজালাল ব্যবসার জন্য সেতুর বাবার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা এনে দিতে বলেন। এতে সেতু রাজি না হওয়ায় তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় শাহজালালের পরিবার। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সেখানে সেতুর নামে ডাকযোগে একটি তালাক নামা পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এসব ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বামী শাহজালাল আহাম্মেদসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী নাজিয়া ইসলাম সেতু। প্রথমে যৌতুক নিরোধ আইন এবং পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরেকটি মামলা করেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ৫ মাসের সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে কষ্টে জীবনযাপন করছেন সেতু। সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন যাচ্ছে সেতুর।

অভিযোগের বিষয়ে শাহজালালের বাবা ফরিদ মিয়া বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে সেতুর বনিবনা ছিল না। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকতো। এছাড়া সেতু আমার সঙ্গেও বেয়াদবি করেছে। আমার ছেলের ইচ্ছাতেই সেতুকে তালাক দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর কথা