৪ বছর ধরে প্রেম করেও বিয়ে না করায় প্রেমিকের বাড়ি গিয়ে অনশন শুরু করছেন হাসনা খাতুন নামে এক কলেজছাত্রী। তিনি গত ৯ দিন ধরে অনশন করলেও কোনো আইনগত সহায়তা পাচ্ছেন না।
স্থানীয় একজন নারী ইউপি মেম্বার তার খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। ওই কলেজছাত্রীর অনশন করার পর প্রেমিকসহ বাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছেন। প্রেমিক সেলিম রেজা বিয়ে না করলে কলেজছাত্রী আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন।
প্রেমিক সেলিম রেজা পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানাধীন পুরানভারেঙ্গা ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের তোতা মাঝির ছেলে। কলেজছাত্রী হাসনা খাতুন একই গ্রামের আবুল হোসেন রাজমিস্ত্রির মেয়ে। তিনি স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
হাসনা খাতুন জানান, গত চার বছর ধরে তাদের প্রেমের সস্পর্ক চলছে। তাদের দুই পরিবার পরস্পর আত্মীয় হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই তাদের বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। তাদের সম্পর্ক অনেক ঘনিষ্ঠ। তার কাছে বিভিন্ন প্রমাণও রয়েছে।
তিনি আরো জানান, এর আগে তিনি সেলিম রেজার কথামতই তাদের বাড়ি গিয়ে উঠেছিলেন। তখন বাড়ির লোকজন তাকে বলে সেলিম চাকরি পেলে তাকে তারা ঘরে তুলে আনবে। এসব কথা বলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল। সম্প্রতি সেলিমের চাকরি হয়েছে। কিন্তু সেলিমের বাড়ির লোকজন ছেলেকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্রী দেখছেন। বিষয়টি জানার পর হাসনা খাতুন তার প্রেমিক সেলিমকে জানান। সেলিম তাকে তাদের বাড়ি এসে উঠতে বলেন। সে মোতাবেক গত ১৬ নভেম্বর হাসনা সেলিমদের বাড়ি আসেন।
তবে সেলিমের বাড়ির লোকজন তাকে মারধর করেন। তারপরও তিনি বাড়ি ছেড়ে না যাওয়ায় এবং গ্রামের লোকজন ভিড় করায় সেলিম ও তার বাড়ির লোকজন গা ঢাকা দেন। এরপর থেকে হাসনা এ বাড়িতেই অনশন করে যাচ্ছেন।
কলেজছাত্রী জানান, তারা গরিব হলেও তাদের মানসম্মান রয়েছে। তিনি এখন বাড়ি গিয়ে কীভাবে মুখ দেখাবেন? ‘আমাকে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করবো।’
এ ব্যাপারে প্রেমিক সেলিমের সঙ্গে মোবাইলে (০১৭০৩------২৭) যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ কেটে দেন।
এদিকে কলেজছাত্রীকে স্থানীয় নারী ইউপি মেম্বার সেলিনা খাতুন বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে সাহায্য করছেন।
আমিনপুর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, বিষয়টি তারা শুনেছেন। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। তবে সামাজিকভাবে বিষয়টির সমাধান করতে হবে।
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুর আলী জানান, প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান করার বিষয়টি শুনেছেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড মেম্বারকে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কলেজছাত্রী প্রতারিত হয়েছেন মনে করলে থানা পুলিশ বা আদালতেও যেতে পারেন। তারপরও সামাজিকভাবে সমাধান করা যায় কিনা তিনি দেখবেন।
গাজীপুর কথা