ঢাকা,  শুক্রবার  ০৩ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

হায়দরাবাদের রানবন্যা থামিয়ে ‘সান্ত্বনার’ জয় বেঙ্গালুরুর

প্রকাশিত: ১১:৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

হায়দরাবাদের রানবন্যা থামিয়ে ‘সান্ত্বনার’ জয় বেঙ্গালুরুর

ফাইল ছবি

আইপিএলের চলতি আসরে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে রীতিমতো উড়ছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। প্যাট কামিন্সের দলটি এবার তিনবারই ২৬০–এর গণ্ডি পেরিয়েছিল, এর মধ্যে দুটিই ছিল আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। গতকালও তারা যখন আগে ফিল্ডিং পেল, অনেকেই বলতে শুরু করেন হায়দরাবাদকে তিনশ করা থেকে ঠেকিয়ে দিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টো চিত্র। বিরাট কোহলিদের রানতাড়ায় তারা ৩৫ রানে হেরে গেছে।

হায়দরাবাদের মাঠে গতকাল (বৃহস্পতিবার) খেলতে নেমেছিল ফাফ ডু প্লেসির নেতৃত্বাধীন বেঙ্গালুরু। যারা ইতোমধ্যে আইপিএল থেকে নিজেদের বিদায় প্রায় নিশ্চিত করে রেখেছে, বাকি কেবল কাগজে-কলমের হিসাব। অথচ সর্বশেষ ৬ ম্যাচেই টানা পরাজিত দলটি এদিন সান্ত্বনার জয় তুলে নিলো। আগে ব্যাট করে তারা ২০৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিক হায়দরাবাদকে। যার বিপরীতে ট্রাভিস হেড, হেনরিখ ক্লাসেনরা ঝড় তুলতে না পারায় কামিন্সের দলটি থেমে যায় ১৭১ রানে।

হায়দরাবাদের ব্যাটিং লাইন আপের কথা মাথায় রেখে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ডু প্লেসি। শুরুটা কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ভালোই করেন। দ্রুত রান তুলছিলেন তারা। মাত্র ৩.৪ ওভারে দুজন মিলে ৪৮ রান তোলেন। এরপরই হোঁচট খান ডু প্লেসি, ১২ বলে ২৫ রান করে আউট হয়ে যান। তবে ঠিকই পাওয়ার প্লে-তে ৬১ রান তুলে ফেলে বেঙ্গালুরু। কিন্তু আবার বিপত্তি বাধে উইল জ্যাকসের বিদায়ে। মাত্র ৬রান করে ফেরেন তিনি।

বেঙ্গালুরুর রানের গতি পাওয়ার প্লে-র পরে কিছুটা কমে আসে। সেখান থেকে দলকে টেনেছেন চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা রজত পাতিদার। মায়াঙ্ক মারকান্দের এক ওভারেই পরপর চারটি ছক্কা হাঁকান তিনি। ফলে মাত্র ১৯ বলেই পাতিদার ব্যক্তিগত অর্ধশতরানও পেয়ে যান। কিন্তু পরের বলেই আউট হন তিনি। কোহলিও নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। তবে তার ইনিংসটি ছিল ধীরগতির, ফিফটি করতে ভারতীয় এই তারকা ৪২ বল মোকাবিলা করে ফেলেন। ম্যাচটি হারলে যার দায়টা অবশ্যই নিতে হতো কোহলিকে। শেষ পর্যন্ত তিনি থামেন ৫১ রানে।

বেঙ্গালুরুর ইনিংসকে ২০০ পার করার দায়িত্ব গিয়ে পড়ে ক্যামেরন গ্রিন ও দীনেশ কার্তিকের ওপর। গ্রিন ভাল খেলছিলেন। ডেথ ওভারে ভাল বল করছিলেন হায়দরাবাদের পেসাররাও। বড় শট খেলার সুযোগ দিচ্ছিলেন না। ১৯তম ওভারে কামিন্সের বলে হাত খোলেন বেঙ্গালুরুর দুই ব্যাটার। সেই ওভারে ওঠে ১৫ রান। তবে সেই ওভারেই কার্তিকের উইকেটও হারায় বেঙ্গালুরু। শেষ ওভারে টি নাতারাজন দেন ১২ রান। ২০ ওভারে ২০৬ রানে শেষ হয় বেঙ্গালুরুর ইনিংস। ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন গ্রিন। কার্তিক ৬ বলে ১১ এবং সমান বলে ১২ রান করেন স্বপ্নিল সিং। ১০০তম ম্যাচ খেলতে নামা জয়দেব উনাদকাট হায়দরবাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন।

২০৭ রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি হায়দরাবাদের। প্রথম ওভারেই উইল জ্যাকসের বলে ১ রানের মাথায় আউট হন ট্রাভিস হেড। অপর ওপেনার অভিষেক শর্মা মারমুখী মেজাজে ছিলেন। ১৩ বলে ৩১ রান করে যশ দয়ালের বলে বড় শট মারতে গিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর ৭ রানের মাথায় ফেরেন আগের ম্যাচগুলোতে তেমন পরীক্ষায় না পড়া এইডেন মার্করামও। হায়দরাবাদের বিপদ আরও বাড়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা হেনরিখ ক্লাসেনকেও হারিয়ে। চলতি আইপিএলে প্রথমবার তারা পাওয়ার প্লে-তে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে।

লক্ষ্য বড় হওয়ায় দ্রুত রান তোলা ছাড়া উপায় ছিল না হায়দরাবাদের। সেই চেষ্টা করতে দিয়ে নীতিশ কুমার রেড্ডি ও আব্দুল সামাদও আউট হয়ে যান। দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সব দায়িত্ব গিয়ে পড়ে শাহবাজ আহমেদ ও অধিনায়ক কামিন্সের কাঁধে। তাই তো আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন কামিন্স। একের পর এক বড় শট খেলেন তিনি। ১৪ বলে ৩০ রানও করে ফেলেছিলেন কামিন্স, কিন্তু পরের বলেই তার বিদায়ে হায়দরাবাদের আশা প্রায় শেষ হয়ে যায়। শাহবাজ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেও খেলেছেন ৩৭ বলে ৪০ রানের ধীরগতির ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭১ রানে থামে হায়দরাবাদ।

বেঙ্গালুরুর হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন, কার্ন শর্মা ও স্বপ্নিল। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ফিফটি হাঁকানো রজত পাতিদার হয়েছেন ম্যাচসেরা।