ঢাকা,  বুধবার  ০১ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

নবীজির স্বপ্নযোগে পাওয়া দোয়া

প্রকাশিত: ০১:১০, ২১ অক্টোবর ২০২৩

নবীজির স্বপ্নযোগে পাওয়া দোয়া

সংগৃহীত ছবি

মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) বলেন, একদিন সকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় করতে আসতে দেরি করেন। এমনকি আমরা সূর্য উদিত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলাম। তিনি তাড়াতাড়ি বের হয়ে এলে নামাজের জন্য ইকামত দেওয়া হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) সংক্ষেপে নামাজ আদায় করলেন।

তিনি সালাম ফেরানোর পর উচ্চৈঃস্বরে আমাদের ডেকে বলেন, তোমরা যেভাবে সারিবদ্ধ অবস্থায় আছ সেভাবেই থাকো। তারপর তিনি আমাদের দিকে ফিরে বসলেন, অতঃপর বললেন, সকালে তোমাদের কাছে আসতে আমাকে কিসে বাধাগ্রস্ত করেছে তা এখনই তোমাদের বলছি। আমি রাতে উঠে অজু করলাম এবং সামর্থ্যমতো নামাজ পড়লাম। নামাজের মধ্যে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম।

অতঃপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম, এমন সময় আমি আমার বরকতময় প্রভুকে খুব সুন্দর অবস্থায় (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি বললাম, প্রভু! আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, ঊর্ধ্বজগতের অধিবাসীরা (শীর্ষস্থানীয় ফেরেশতারা) কী ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললাম, প্রভু! আমি জানি না। আল্লাহ তাআলা এ কথা তিনবার বললেন।

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তাঁকে দেখলাম যে তিনি তাঁর হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। আমি আমার বক্ষস্থলে তাঁর হাতের আঙুলের শীতলতা অনুভব করলাম। ফলে প্রতিটি জিনিস আমার নিকট আলোকোদ্ভাসিত হয়ে উঠল এবং আমি তা জানতে পারলাম। আল্লাহ তাআলা বললেন, হে মুহাম্মদ! আমি বললাম, প্রভু! আমি আপনার কাছে উপস্থিত। তিনি বললেন, ঊর্ধ্বজগতের বাসিন্দারা কী ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললাম, কাফফারাত (যেসব কাজে পাপ মোচন হয়) বিষয়ে তারা বিতর্ক করছে।

তিনি বলেন, সেগুলো কী? আমি বললাম, হেঁটে নামাজের জামাতগুলোতে উপস্থিত হওয়া, নামাজের পর মসজিদে বসে থাকা এবং কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে অজু করা। তিনি বললেন, তারপর কী ব্যাপারে (তারা বিতর্ক করছে)? আমি বললাম, খাদ্যপ্রার্থীকে আহার্য দান, নম্রতার সঙ্গে কথা বলা এবং রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে সেই সময় নামাজ আদায় করা প্রসঙ্গে।
আল্লাহ বললেন, তুমি কিছু চাও। আমি বললাম, উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা ফি’লাল খাইরাতি, ওয়া তারকাল মুনকারাতি, ওয়া হুব্বাল মাসাকিনি, ওয়া আন-তাগফিরালি, ওয়া তারহামানি, ওয়া ইজা আরাদতা ফিতনাতা কাউমিন ফাতাওয়াফফানি গাইরা মাফতুনিন। আসয়ালুকা হুব্বাকা ওয়া হুব্বা মান ইয়ুহিব্বুকা ওয়া হুব্বা আমালিন ইয়ুকাররিবু ইলা হুব্বিকা।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ভালো ও কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের, মন্দ কাজগুলো বর্জনের, দরিদ্রজনদের ভালোবাসার তাওফিক চাই, তুমি আমায় ক্ষমা কোরো ও দয়া কোরো। তুমি যখন কোনো গোত্রকে বিপদে ফেলার ইচ্ছা কোরো, তখন তুমি আমাকে বিপদমুক্ত রেখে তোমার কাছে তুলে নিও। আমি প্রার্থনা করি তোমার ভালোবাসা, যে তোমায় ভালোবাসে তার ভালোবাসা এবং এমন কাজের ভালোবাসা, যা তোমার ভালোবাসার নিকটবর্তী করে দেয়।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, স্বপ্নটি অবশ্যই সত্য। অতএব তা পড়, তারপর তা শিখে নাও। ইমাম তিরমিজি (রহ.) হাদিসটি বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত বলে মন্তব্য করেছেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩২৩৫)