ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

২৪ মার্চ ১৯৭১, আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই: বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: ১১:৪১, ২৪ মার্চ ২০২১

২৪ মার্চ ১৯৭১, আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই: বঙ্গবন্ধু

পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী একের পর এক বৈঠক করছে। প্রহসনের এইসব বৈঠক আগেই প্রত্যাখ্যান করছে বাংলার মানুষ।

১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সমাগত মিছিল চলতে থাকে।

মিছিলকারীদের উদ্দেশে শেখ মুজিব বলেন, ‘আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই। আগামীকালের মধ্যে সমস্যার কোনো সমাধান না হলে বাঙালি নিজেদের পথ বেছে নেবে। আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না।’

এদিকে সারাদেশে চলছিল বাঙালি নিধন। ২৩ মার্চ রাত থেকে ২৪ মার্চ সকাল পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সৈয়দপুর সেনানিবাসের পার্শ্ববর্তী বোতলাগাড়ী, গোলাহাট ও কুন্দুল গ্রাম ঘেরাও করে অবাঙালিদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে প্রায় ১০০ জন নিহত এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়।

সে সময় রংপুর হাসপাতালের সামনে জনতা ও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানি সেনারা রংপুর সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকায় নিরস্ত্র মানুষদের ওপর বেপরোয়াভাবে গুলিবর্ষণ করে। এতে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত এবং বহু লোক আহত হয়।

অপরদিকে চট্টগ্রামে পাকিস্তানি সেনারা নৌ-বন্দরের ১৭ নম্বর জেটিতে নোঙর করা এমভি সোয়াত জাহাজ থেকে সমরাস্ত্র খালাস করতে গেলে প্রায় ৫০ হাজার বীর বাঙালি তাদের ঘিরে ফেলে। সেনাবাহিনী তখন জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে ২০০ জন শহীদ হন।

মিরপুরে অবাঙালি বিহারীরা সাদা পোশাকধারী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় বাঙালিদের বাড়িঘরের ছাদ থেকে বাংলাদেশের পতাকা ও কালো পতাকা নামিয়ে জোর করে তাতে আগুন দেয় এবং পাকিস্তানি পতাকা তোলে। রাতে বিহারিরা সেখানে ব্যাপক বোমাবাজি করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।

এদিন সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে আওয়ামী লীগ ও সরকারের মধ্যে উপদেষ্টা পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ ও ড. কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে তাজউদ্দীন আহমদ উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বক্তব্য প্রদান শেষ হয়েছে। এখন প্রেসিডেন্টের উচিত তার ঘোষণা দেয়া।

এদিকে নির্বিচারে গণহত্যার প্রতিবাদে সামরিক সরকার প্রদত্ত ‘সিতারায়ে খেদমত’ খেতাব বর্জন করেন কবি মোজাম্মেল হক।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন