ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

২২ মার্চ ১৯৭১, ২৫ মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয়

প্রকাশিত: ১১:৫৪, ২২ মার্চ ২০২১

২২ মার্চ ১৯৭১, ২৫ মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয়

২২ মার্চ ১৯৭১, দিনটি ছিল সোমবার। এদিন বাঙালির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বেলা সাড়ে ১১টায় প্রেসিডেন্ট ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ইয়াহিয়া ও ভুট্টোর সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তবে প্রহসনের এ বৈঠকের মাঝেও এক মুহূর্তের জন্যও থেমে নেই স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষুব্ধ মানুষের সভা, শোভাযাত্রা, মিছিল।

সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের গগনবিদারী স্লোগানে রাজধানীর আকাশ-বাতাস মুখরিত ছিল। এদিকে জয়দেবপুরে পাকিস্তানি সেনারা জনতার ওপর গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া যায়। টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জে তার প্রতিক্রিয়া হয়। ঢাকার মিরপুরে, চট্টগ্রামে, পার্বতীপুর সৈয়দপুরে বিহারি-মিলিটারি উস্কানিতে বাঙালি খুনোখুনি রক্তারক্তির খবর আসতে শুরু করে।

এ রকম বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্যে প্রায় ৭৫ মিনিটব্যাপী আলোচনা শেষে প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার নির্ধারিত বৈঠক ছিল। সে অনুযায়ী আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে যাই। সেখানে মি. ভুট্টো উপস্থিত ছিলেন। আমি প্রেসিডেন্টকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি- ৪টি শর্ত পূরণ না হলে আমরা জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে যোগদান করতে পারি না।’

পরে দুপুর ১টায় নিজ বাসভবনে ফিরে বঙ্গবন্ধু পুনরায় সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। আজকের আলোচনায় কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আলোচনায় অগ্রগতি সাধিত না হলে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি কেন?’ অপর এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ইতোমধ্যে বাংলাদেশে গুরুতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জনগণের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’

তবে ভুট্টো এবং ইয়াহিয়ার আচরণে জনমনে এটা সুস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, পাকিস্তানি সামরিক কর্তৃপক্ষ এবং ভুট্টো আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করে গণহত্যার পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। অর্থাৎ আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।

সন্ধ্যায় সংবাদপত্রে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বলেছেন, ‘পাকিস্তানের উভয়াংশের নেতৃবৃন্দ এবং রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে সমঝোতার ক্ষেত্র অধিকতর প্রসারিত করার সুবিধার্থে ২৫ মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হলো।’

পুনরায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশন কবে বসবে এ রকম কোনো দিন-তারিখ উল্লেখ না করেই বিবৃতিটি শেষ হয়। ঢাকায় অবস্থানরত পশ্চিম পাকিস্তানের তিনটি পার্লামেন্টারি গ্রুপের নেতৃবৃন্দ ওয়ালী খান, দৌলতানা এবং মুফতি মাহমুদ প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্তে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করে। যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আমরা এখনও বিশ্বাস করি যে, যে কোনো রকম জাতীয় ইস্যুতে আলোচনার এবং মীমাংসার সর্বাপেক্ষা উত্তম স্থান হচ্ছে জাতীয় পরিষদ।’

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন