১৯৭১ সালের ১২ই মার্চ ছিল আরেকটি সংগ্রামমুখর দিন। ৭ই মার্চের পর বঙ্গবন্ধুর ডাকে সর্বত্র চলছিল অসহযোগ আন্দোলন। জনগণ সরকারকে খাজনা ও ট্যাক্স দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ১২ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে অর্থ ও পণ্য চালান বন্ধ হয়ে যায়।
বেশকিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন চলমান স্বাধীনতা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা জ্ঞাপন করে।
চলচ্চিত্র শিল্পীদের একটি সভা শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন নায়ক রাজ রাজ্জাক, মোস্তফা, কবরীসহ আরও অনেকে। চলচ্চিত্র শিল্পীরা একটি মিছিল বের করে, যা টেলিভিশন অফিসের সামনে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইউনিয়নের সভাপতি আলী আশরাফ, সম্পাদক কামাল লোহানী ও সদস্য আ ন ম গোলাম মোস্তফা বক্তব্য রাখেন।
তারা বলেন, দেশব্যাপী চলমান স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে সাংবাদিক সমাজ বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। তারা সর্বশক্তি দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেয়ার পক্ষে মতামত দেন।
প্রায় অর্ধশত চারু ও কারুশিল্পীর উপস্থিতিতে পটুয়া শিল্পী কামরুল হাসানের আহ্বানে একটি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। আয়োজিত সভায় মুর্তজা বশির ও কাইয়ুম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এ সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। সভায় শাপলাকে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ ময়দানে আয়োজিত এক সভায় মওলানা ভাসানী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীত্বকে লাথি মেরে শেখ মুজিব যদি বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের আন্দোলনকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারে তাহলে তিনি ইতিহাসের কালজয়ী বীর হিসেবে অমর হয়ে থাকবেন।’
লাহোরে তেহরিক-ই-ইশতেকলালের প্রধান আসগর খান বলেন, ‘যারা বন্দুক-বুলেট দিয়ে পূর্বাঞ্চলের জনগণকে দাবিয়ে রাখতে চায়, তারা পাগলের প্রলাপ বকছে। এখন যদি পূর্ব পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তাহলে পশ্চিম পাকিস্তান পাঁচ বছরের বেশি টিকতে পারবে না।’
গাজীপুর কথা