ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু: বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৭ মার্চ ২০২১

জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু: বঙ্গবন্ধু

১৯৭১ সালের ১৭ মার্চ ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। এ উপলক্ষে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মিছিল করে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডিস্থ ৩২ নম্বর রোডের বাসভবনে গিয়ে তাদের শেখ মুজিবকে শুভেচ্ছা জানায়।

সকাল ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন শেখ মুজিবুর রহমান। কড়া সামরিক প্রহরার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভবনে বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক ১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে।

আলোচনা শেষে প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বেরিয়ে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আলোচনা শেষ হয়ে যায়নি। তবে পরবর্তী বৈঠকের তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু নিজের বাসভবনে গেলে একজন সাংবাদিক জানতে চান বৈঠক সংক্ষিপ্ত হল কেন। জবাবে বঙ্গবন্ধু মৃদু হাসেন।

আরেক বিদেশি সাংবাদিক বলেন, এই হাসি থেকে আমরা কী কিছু অনুমান করে নিতে পারি? জবাবে শেখ মুজিব বলেন, আপনার মুখেওতো মৃদু হাসি। আমি জাহান্নামে বসেও হাসতে পারি।

ইয়াহিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বঙ্গবন্ধু সন্তুষ্ট কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমিতো বলেছি নরকে বসেও আমার চিত্তে সুখের অভাব হবে না। আমার চেয়ে বেশি সুখী আর কে আছে? সাত কোটি মানুষ আজ আমার পেছনে পাহাড়ের মত অটল। আমার জনগণ যা দিয়েছে তার তুলনা নেই।

জন্মদিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া আলাপে বঙ্গবন্ধু বলেন, আমরা জন্মদিনই কি আর মৃত্যুদিনই কি? আমার জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু। আপনারা আমার জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যে কোনো মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে।

সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বলেন, পূর্ববাংলা এখন স্বাধীন, সাড়ে সাত কোটি বাঙালি এখন স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। আমার ৮৯ বছরের অতীতের সবকটি আন্দোলনের সাথে আমি জড়িত ছিলাম। কিন্তু একটি সার্বজনীন দাবিতে জনগণের মধ্যে বর্তমান সময়ের মত একতা ও সহযোগিতা আমি এর আগে কখনো দেখিনি।

অসহযোগ আন্দোলনের ষোড়শ দিবসে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ময়দানসহ বিভিন্ন এলাকায় কুচকাওয়াজ ও রাইফেল চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু করেন।

লাহোরে পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিকরা পৃথক পৃথক বিবৃতিতে ভুট্টোর দুই অংশের দুটি সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব প্রসঙ্গে বলেন, সাধারণ নির্বাচন গোটা দেশের জন্য হয়েছে। দুই অংশের জন্য পৃথক পৃথক নির্বাচন হয়নি। কাজেই জাতীয় পরিষদে একটি মাত্র মেজরিটি পার্টি থাকবে। ভুট্টোর প্রস্তাব পাকিস্তানকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়।

স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসকে প্রতিরোধ দিবস পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ওই দিন সরকারি-বেসরকারি ভবনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শাসনতন্ত্র নিয়ে আলোচনার জন্য ভুট্টোকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানান।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন